

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, মোঃ মাইন উদ্দিন : কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার গরু ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিন বিভিন্ন কৌশলে কৃষক ও গরু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৬/৭ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সাহাব উদ্দিন উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের বড় ছয়সূতী গ্রামের আরব আলী খান চকবাজারের দক্ষিণ পাশের বাড়ির মৃত সিরাজ উদ্দিনের পুত্র।
জানা যায়, সাহাব উদ্দিন কিছুদিন ধরে এলাকায় গরুর ব্যবসা করে আসছিল। এ সুবাদে এলাকার মানুষের সঙ্গে তার একটা সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর এ সম্পর্কের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সে বিভিন্ন অজুহাতে এলাকার কয়েকজন কৃষক ও গরু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বাকি গরু নিয়ে এবং গরু কেনার কথা বলে হাওলাত বাবত ৬/৭ লাখ টাকা নেয়। পরে তাদেরকে দেই দিচ্ছি বলে আশ্বাস দিয়ে হঠাৎ সে উধাও হয়ে যায়।
এ ঘটনায় গত শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ভুক্তভোগী মোঃ মুছা মিয়া বাদী হয়ে সাহাব উদ্দিনকে আসামী করে কুলিয়ারচর থানায় একটি অভিযুক্ত দায়ের করেছেন। ভুক্তভোগী মোঃ মুছা মিয়া বড় ছয়সূতী গ্রামের মৃত জিন্নত আলীর পুত্র।
ভুক্তভোগী মোঃ মুছা মিয়া বলেন, সাহাব উদ্দিন প্রতারণা করে তার কাছ থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা মূল্যের ২টা গাভী বিক্রি করার জন্য বাজারে নিয়ে যায় এবং এ গাভী বিক্রি করে একটি টাকাও তাকে দেয়নি। একই অভিযোগ নিজ গাঁও গ্রামের মোঃ রবি মিয়ার পুত্র মোঃ সুজন মিয়ার। তিনি বলেন, সাহাব উদ্দিন তার কাছ থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ১টা গাভী ও ১টা বাছুর বাকিতে কিনে নিয়ে বাজারে বিক্রি করে বাড়িতে এসে তাকে কোনো টাকা দেয়নি। টাকা চাইলে দেই দিচ্ছি বলে সময় ক্ষেপন করে সে পালিয়ে যায়।
শুধু তাদের নয়, বিভিন্ন কায়দায় নলাবাইদ গ্রামের মৃত ইনু মিয়ার পুত্র মেনু মিয়ার ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা মূল্যের ১ টা গাভী, ছয়সুতী গ্রামের মৃত রহমত আলীর পুত্র মোঃ বাক্কার মিয়ার নিকট থেকে নগদ ১ লাখ টাকা, বড় ছয়সূতী গ্রামের মৃত জহির উদ্দিন (তোটা মাস্টার) এর পুত্র আরব আলী খান চকবাজারের বিকাশ এজেন্ট মোঃ আব্দুল্লাহ’র নিকট থেকে নগদ ৫০ হাজার ও বড় ছয়সূতী গ্রামের মৃত জমির উদ্দিনের পুত্র মোঃ মুছলিম মিয়ার নিকট থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকসহ এলাকার আরও অনেকের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা নিয়ে সে গাঁ ঢাকা দেয়।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় আমাদের এ প্রতিনিধি আবর আলী খান চকবাজারে গেলে ভুক্তভোগীরা এসে এইসব অভিযোগ করেন। এ সময় মোঃ মুছা মিয়া ও মোঃ সুজন মিয়া বলেন, আমরা এখন নিঃস্ব। আমাদেকে রাস্তার ফকির বানিয়ে চলে গেছে সাহাব উদ্দিন।
ঘটনার সত্যতা জানতে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ হেলাল আহম্মেদ ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ বাচ্চু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী আমাদের নিকট এসেছিল কিন্তু অভিযুক্ত সাহাব উদ্দিন গাঁ ঢাকা দেওয়ায় আমরা এর কোনো সুরাহা করতে পারছি না। তবে আমি যতটা জানি, সাহাব উদ্দিন যাদের টাকা নিয়ে পালিয়েছে তারা কেউই চলনশীল নয়, সবাই নিঃস্ব।
এ সময় ভুক্তভোগী মোঃ মুছা মিয়া ও মোঃ সুজন মোঃ সুজন মিয়াসহ একাধিক ভুক্তভোগী প্রতারক সাহাব উদ্দিনকে গ্রেফতার করার মাধ্যমে তার কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে ভুক্তভোগীদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের নিকট আকুল আবেদন জানান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্তের দায়িত্বে থাকা কুলিয়ারচর থানার ছয়সূতী ইউনিয়নের ৭নং বিট অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন জানিয়ে বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তির মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত সাহাব উদ্দিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।