জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ড. কাজী এরতেজা হাসানের এক দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (২ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশাররফ হোসেনের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসআই (নি.) মো. মেহেদী হাসান আসামিকে আদালতে হাজির করে দুই দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আসামি সরকারি বিভিন্ন অফিস বিশেষ করে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহার করে জাল দলিল তৈরি করেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার সহযোগী অন্য আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করা যাবে। এ ছাড়া তার সঙ্গে বাড্ডা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত কিনা, তা শনাক্ত করা যাবে।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, জাল জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা দলিলে ‘কে স্বাক্ষর করেছেন’ ওই ব্যক্তিকে শনাক্তসহ গ্রেপ্তার করা যাবে। সর্বোপরি মামলাটি তদন্তাধীন। এ মামলার ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করার লক্ষে আসামিকে পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: এরতেজা হাসান রিমান্ডে
এরতেজা হাসানের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী কাজী নজিব উল্যাহ হিরু, মোকলেছুর রহমান বাদল রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
শুনানিতে তারা বলেন, পানির মধ্যে জমি দেখিয়ে বিক্রি করে সেটাই আশিয়ান। তারাই মামলা করেছে। এজাহারে কাজী এরতেজার নাম নেই। কীসের ওপর ভিত্তি করে তাকে ধরে নিয়ে আসলেন তদন্ত কর্মকর্তা। আশিয়ানের জোরটা কি বেশি? কী গ্রাউন্ডে রিমান্ড চাইলেন। তাকে হয়রানি করার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি একজন সজ্জন ব্যক্তি ও একটি জাতীয় পত্রিকার সম্পাদক। তাকে জামিন দেওয়া হোক।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এর বিরোধিতা করে বলেন, তদন্তে ড. এরতেজার নাম এসেছে। তাকে রিমান্ডে নিলে আরও তথ্য বের হয়ে আসবে।
এরপর বিচারক ড. কাজী এরতেজাকে কিছু প্রশ্ন করেন।
প্রথমে বিচারক তার নাম জানতে চান। ড. কাজী এরতেজা হাসান বলে নিজের পরিচয় দেন তিনি। এরপর বিচারক তার কাছে জানতে চান, আপনি আপনার অফিসের কোনও স্টাফ নিয়ে রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়েছিলেন কি না। জবাবে এরতেজার বলেন, না। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।
তখন বিচারক আসামিপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, তাকে ভিকটিমাইজড করার ইচ্ছে থাকলে এজাহারে নাম থাকতো। এজাহারে নাম দিতে পারতো। তাকে ভিকটিমাইজড করার উদ্দেশ্যে ছিল না। ৩ জন সাক্ষী ১৬৪ ধারা করেছে। বাসায় যাওয়া, ছবি নেওয়া, স্বাক্ষর না দেওয়ায় হুমকি দেওয়া হয়েছে। এটুকু না আসলে আজ তাকে আদালতে আসতে হতো না।
তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, আসামির কোনও বেনিফিট আছে। রিমান্ডে নেওয়ার মত গ্রাউন্ড নেই। রিমান্ড নামঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার একদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। যা দুই দিনের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে।