

মো: রেদওয়ানুল হক মিলন, ঠাকুরগাঁও: বাজারে নিম্নমানের গরম কাপড় (কম্বল) এর ছড়াছড়ির কারণে টেকশই ও ভাল মানের কম্বল তৈরি করে বিক্রয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের তাঁতীরা। কমেছে বেচাকেনা। ফলে পুরোনো এ পেশা ছেড়ে যুক্ত হচ্ছেন অন্য পেশায়। হারাতে বসেছে ঐতিহ্য।
তাঁতীদের তথ্য মতে, গেল তিন বছর আগেও এ পেশার ওই গ্রামের পাঁচশতাধিক তাঁতী কম্বল তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করলেও বর্তমানে দুইশ তাঁতী কম্বল তৈরি করছেন।
জেলা শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দুরে ঠাকুরগাঁওয়ের কেশুরবাড়ী এই গ্রামটিতে সকাল হলেই তাঁতের খুটখাট শব্দে ঘুম ভাঙ্গে এলাকার মানুষের। সংসারের আয় রোজগারে একমাত্র ভরসা তাদের এই তাঁত। একটা সময় এ গ্রামের পাঁচশতাধিক তাঁতী, শীত আসার আগে থেকেই গরম কাপড় (কম্বল) তৈরিতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কর্মচাঞ্চল্যে থাকলেও বর্তমানে তা ঝিমিয়ে পরেছে। বাজারে নিম্নমানের কম্বল কমদামে বিক্রি হওয়ায় বাজারের সাথে তাল মেলাতে পারছেন না তারা।
অন্যদিকে হাতের তৈরি ভাল মানের কম্বল তৈরি করেও কাঙ্খিত দাম না পাওয়া ও পুজিঁর অভাবে কাঁচামাল সংগ্রহ করতে না পারায় পেশা ছেড়ে ঝুকছেন অন্য পেশায়। তবে স্বল্প সুদে ঋণ এবং শীতকালীন সময়ে সরকারিভাবে তাদের তৈরিকৃত কম্বল ক্রয় করলে এ ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তাঁত শিল্পের সাথে জড়িতরা।
কারিগররা জানান, পুঁজি স্বল্পতার কারনে তারা তাদের ব্যবসাকে বড় করতে পারছেন না। কম্বল তৈরি জিনিসের দাম বাড়লেও বাড়েনি কম্বলের দাম। এছাড়া পাইকারদের দৌরাত্মের কারণে তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বর্তমানে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এ পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এ তাছাড়া তারা তেমন কোনো সরকারি সুযোগ সুবিধাও পাচ্ছেন না।
ঐতিহ্যকে টিকিয়ে তাঁতীদের কম্বল তৈরির পাশাপাশি অন্যান্য শীত বস্ত্র তৈরির পরামর্শসহ স্বল্প সুদে ঋণের সুবিধায় আনা হচ্ছে বলে জানান, বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক নুরেল হক।
আর এ বিষয়ে সদর উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান জানান, শিল্প বিকাশে সহযোগীতা করা হবে তাঁতীদের।