• আজ ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পঞ্চগড়ে ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি

| নিউজ রুম এডিটর ৬:৫৪ অপরাহ্ণ | জুন ২২, ২০২৩ সারাদেশ

ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। ঈদ উপলক্ষ্যে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন হাটে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। তবে এবার তেমন বড় গরু চোখে পড়েনি।

জেলার জগদল ও শালবাহানসহ কয়েকটি হাটবাজার ঘুরে দেখা যায়, আড়াই লাখ টাকার কোনো কোরবানির পশু বিক্রি হয়নি। ক্রেতারা তাদের বাজেট অনুযায়ী ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার মধ্যে ছোট-মাঝারি বেশি কিনছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলা শহরের রাজনগর ও জগদল হাট, বোদা উপজেলার নগরকুমারী হাট, তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুলিয়া ও শালবাহান হাট, দেবীগঞ্জের কালীগঞ্জ, দেবীগঞ্জ ও ভাউলাগঞ্জ হাট এবং আটোয়ারী উপজেলার ফরিকরগঞ্জ হাট বেশ জমে উঠেছে। বেচাকেনাও হচ্ছে প্রচুর। তবে এবার ছোট ও মাঝারি গরুর দিকেই নজর বেশি ক্রেতাদের।

এবার গরুর হাটে ভারতীয় গরু না থাকায় দেশি গরুর চাহিদা ও দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে গো-খাদ্যের দাম বাড়ার তুলনায় গরুর তেমর দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ বিক্রেতাদের। আর ক্রেতারা বলছেন, এবারও গরুর দাম বেশি।

বোদা পৌরসভার নগরকুমারী হাটবাজারে আসা নুরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, বড় ও মাঝারি গরুর বেচাকেনা সবচেয়ে বেশি হয়েছে। এ হাটে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ষাঁড় গরু বিক্রি হয়েছে।

তেঁতুলিয়ার শালবাহান হাটের গেরস্থ আতিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ষাঁড় গরুর দাম চেয়েছিলাম ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা কিন্তু বিক্রি করেছি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায়।

ব্যবসায়ী কবির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বেশ কয়েকটি গরু এনেছি। এর মধ্যে একটি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দাম হেঁকেছি, ক্রেতারা বিভিন্ন দাম বলছেন। দামে মিললে দিয়ে দেব। তবে এ হাটে দেড় লাখ টাকার উপরে কোনো গরু নেই। বেশিরভাগ ক্রেতাই ৬০ থেকে ৯০ হাজার টাকার মধ্যে গরু কিনছেন।

গরু কিনতে আসা মোশারাফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা পাঁচজনে ভাগে কোরবানি দেব। তাই হাটে গরু কিনতে এসেছিলাম। বাজেট অনুযায়ী, ৮৫ হাজার টাকায় একটি ষাঁড় গরু কিনেছি। তবে দুঃখজনক হলো হাটে গরু মাপার কোনো ডিজিটাল স্কেল চোখে পড়েনি। বাজারে এটা রাখলে ক্রেতারা গরু ওজন করে কিনতে পারতেন।

শালবাহান হাটের ইজারাদার রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এবার হাটে ভারতীয় গরু না থাকায় দেশীয় গরুর আমদানি প্রচুর। সবার পছন্দও দেশীয় গরু। শান্তিপূর্ণভাবেই এখানে কোরবানির পশু বেচাকেনা হচ্ছে। এ হাটে খামারির বিদেশি জাতের গরুও বিক্রি হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন।

এদিকে এ বছর জেলার বিভিন্ন এলাকায় গরুর লাম্পি স্কিন রোগ (এলএসডি) দেখা দিয়েছিল। এর কারণে ক্রেতাদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক তৈরি হয়। তবে অনেক আগেই এ রোগ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কোরবানির ক্ষেত্রে এই রোগ কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে জানায় জেলার প্রাণিসম্পদ কার্যালয়।

জেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুর রহিম বলেন, এবার কোরবানির ঈদে পশুর চাহিদা ৯০ হাজার ৬২টি। আমাদের ১৩ হাজার ৬৭০ জন ছোট-বড় খামারির মাধ্যমে কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৯২টি।

তিনি আরও বলেন, জেলায় কয়েকটি এলাকায় গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। তা এখন নিয়ন্ত্রণে। লাম্পি স্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে এক লাখ ভ্যাকসিন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৯০ হাজার গরুকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। তাই কোরবানির ক্ষেত্রে এই রোগ কোনো প্রভাব ফেলবে না। আর অসুস্থ ও গর্ভবতী গাভি শনাক্তের জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ভেটেরিনারি ক্যাম্প বসানো হয়েছে।