

বিশ্বকাপের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। অথচ এখনও দল ঘোষণা করতে পারেনি বাংলাদেশ। সর্বশেষ সাবেক অধিনায়ক তামিমকে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে নেওয়া না নেওয়া নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। অথচ আগামী ৭ অক্টোবর বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের প্রথম ম্যাচ। তারও চেয়ে বড় কথা- আগামীকাল (বুধবার) বিকেলেই ভারতের বিমান ধরবে টাইগাররা।
তাই বিশ্বকাপ যাত্রার একদিন আগেও দল নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে রীতিমতো সবাই বিস্ময় প্রকাশ করছে। সোমবার দিবাগত গভীর রাতে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের বাসায় বৈঠক করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এবং কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। এতে বোর্ড সভাপতিকে তারা জানিয়েছেন, বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে তারা কোনো ‘আনফিট’ বা ‘অর্ধেক ফিট’ ক্রিকেটারকে দলে চান না। এমনকি তিনি যদি হন তামিম ইকবালের মতো অভিজ্ঞ কেউও।
সাকিব নাকি এমনও বলেছেন যে, আনফিট কেউ দলে থাকলে তিনি বিশ্বকাপে অধিনায়কত্ব করবেন না। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে যে, বিশ্বকাপের আগে অধিনায়কত্ব ছাড়ছেন সাকিব।
অবশ্য নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডের পর তামিম নিজেই সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তিনি এখনও পুরোপুরি ফিট নন। এর পর একই কথা তিনি ব্যক্তিগতভাবে বোর্ডের কয়েকজন পরিচালক ও নির্বাচকদেরও বলেছেন।
নিজের জায়গা থেকে সৎ থাকতে বা অন্য যে কোনো কারণেই হোক, যেটি বাস্তব সেটিই তামিম তাদের জানিয়েছেন। বলেছেন, বিশ্বকাপের দলে যদি তাকে রাখা হয়, তাহলে যেন এটা বিবেচনা করেই রাখা হয় যে, তিনি পুরোপুরি ফিট নন। স্বাভাবিক কারণেই টিম ম্যানেজমেন্ট এবং নির্বাচকদের কাছে এ কথা স্পষ্ট হয়েছে যে, তামিমকে দলে নিলেও হয়তো সব ম্যাচে তাকে পাওয়া যাবে না।
বিশ্বকাপে কমপক্ষে ৯ ম্যাচ খেলতে হবে বাংলাদেশকে। তো সেই টুর্নামেন্টে সব খেলোয়াড়ই সব ম্যাচে খেলতে পারবে- এমন নিশ্চয়তা আগে থেকে দেওয়া যায় না। কারণ কেউ চোটে পড়তে পারেন, কাউকে বিশ্রাম দিতে হতে পারে, আবার টিম কম্বিনেশনের কারণেও কোনো ম্যাচে কেউ দলের বাইরে থাকতে পারেন। তবে তা ঘটে টুর্নামেন্ট শুরুর পর পরিস্থিতির প্রয়োজনে।
কিন্তু তামিমের বিষয়টা অন্যরকম। যখন তিনি নিজেই আগে থেকেই বার বার বলে আসছেন যে, ‘আমি ফিট নই’, ‘আমি ফিট নই’— তখন এটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক যে, জেনেশুনে কেন একজন স্বঘোষিত ‘আনফিট’ খেলোয়াড়কে দলের সঙ্গে রাখা হবে? এর চেয়ে একটু কম অভিজ্ঞ হলেও পুরো ফিট কাউকে নেওয়াই তো ভালো।
জানা গেছে, কোচ ও অধিনায়কও সেই চিন্তা থেকেই গতকাল রাতে তাদের মতামত জানিয়েছেন বোর্ড সভাপতিকে। নিউজিল্যান্ড সিরিজের দলে না থাকা ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমকে আজ মঙ্গলবার দুপুরে হাথুরুসিংহের মিরপুরে ডেকে আনাও যেন কিছু একটা ইঙ্গিত করছে।
তবে এসবের যোগফল অবশ্যই এই নয় যে, ভারত বিশ্বকাপ দলে তামিমের না থাকাটা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। বরং কোচ ও অধিনায়কের মতকে গুরুত্ব দিয়ে বোর্ড তামিমকে ছাড়াই বিশ্বকাপের দল গড়তে পারে- সেই সম্ভাবনা যেমন আছে; তেমনি এত কিছুর পরও তামিমের বিশ্বকাপ দলে থাকারও জোর সম্ভাবনা আছে।
তবে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে আজই। আর সেটা জানা যাবে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড তৃতীয় ওয়ানডের ইনিংস বিরতির সময়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটু অভিনবভাবেই ঘোষিত হবে ভারত বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশ দল।