সিরাজদিখান প্রতিনিধিঃ মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে হত্যা মামলার আসামী পিয়ার আলী (৪০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ২১ জুন শুক্রবার ওই যুবকের স্ত্রী রোজিনা বেগম বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় বাসাইল ইউপি চেয়ারম্যান ছাইফুল ইসলাম যুবরাজকে প্রধান আসামীসহ ১৬ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। যার নং-১৪।
এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান ছাইফুল ইসলাম যুবরাজের ছেলে আরিফ হোসেন ড্যানিকে গ্রেফতার করে আদালত পাঠিয়েছে সিরাজদিখান থানা পুলিশ। দায়েরকৃত মামলার এজাহারে গত ২০ জুন বৃহস্পতিবার রাত অনুমান পৌনে ৮ টার দিকে যুবক পিয়ার আলী তার বাড়ী থেকে তার ভাই জহিরের মুদি দোকানে যাওয়ার পথে উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের উত্তর পাথরঘাটা গ্রামস্থ বাউফল পল্লী বালুর মাঠ কাশবনের কাছাকাছি পৌছা মাত্র পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ধারালো দেশীয় অস্ত্রসহ তার পথরোধ করে মামলার প্রধান আসামী বাসাইল ইউপি চেয়ারম্যান ছাইফুল ইসলাম যুবরাজের হুকুমে অন্যান্য আসামীরা তাহাদের হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে পিয়ার আলীকে এলোপাথারী ভাবে কুপিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম করে এবং সকল আসামীগণ তাদের হাতে থাকা কোদালের আছারি ও বাশের লাঠি দিয়ে এলোপাথারী ভাবে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা জখম করে মর্মে উল্লেখ করা হয়। তবে মামলার প্রধান আসামী ছাইফুল ইসলাম যুবরাজ বলছেন ভিন্ন কথা।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন তিনি এলাকায় ছিলেন না। তিনি গাজীপুর ছিলেন। রাত ১০ টায় তিনি তার বাড়ী ফিরেছেন। তিনি আরো বলেন, আমি এ ঘটনার কিছু জানিনা। আমি ছিলাম গাজীপুরের রাত ১০ টায় বাসায় এসেছি। পরে বাড়ীতে এসে শুনলাম আমিসহ আমার ছেলেপেলেদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। বাউফলের আশপাশের এলাকায় এর আগে বেশ কয়েকবার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ওদের কাজই চুরি ছিনতাই করা। ঘটনার দিন রাত অনুমান ৮ টার দিকে আমার ভাতিজা বাবু সিএনজি দিয়ে আসতেছিলো। তখন জহুর উদ্দীন, পেয়ার আলী ও জহুর উদ্দীনের এক ছেলে ছিনতাই করার জন্য তার উপর আক্রমন করে। বাবুকে একটা কোপও দিয়েছে তারা।
তখন বাবু চিৎকার দিলে জণগন এসে পেয়ার আলীকে পিছিয়েছে। পেয়ার আলী জঘন্য খারাপ মানুষ। এর আগেও ঢাকায় ছিনতাই করতে গিয়ে পিয়ার আলী আটক হয়ে জণতার হাতে মারও খেয়েছে। আমি যে ঘটনার সময় এলাকায় ছিলাম না সেটা পুলিশকে জানাইছি। কিন্তু আমি ঘটনার সময় এলাকায় না থাকার পরও আমার বিরুদ্ধে মামলা হলো কি করে সেটা পুলিশই ভালো বলতে পারবে। এদিকে গত ৩ জুন যুবক আবুল হাশেমকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার ২ নং আসামী পিয়ার আলী কাউন্টার মামলা হিসেবে বাসাইল ইউপি চেয়ারম্যান ছাইফুল ইসলাম যুবরাজসহ তার ছেলেদের দায়ের হওয়া মামলায় আসামী করা হয়েছে মর্মে ইউপি চেয়ারম্যান ছাইফুল ইসলাম যুবরাজের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়।
মামলার বাদী রোজিনা বেগমের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি। এ ব্যপারে সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজিদখান সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান রিফাত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, হ্যা এমন একটি ঘটনা ঘটেছে।
আমরা থানা পুলিশ খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করি এবং এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছি। মামলার অন্যান্য আসামী গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রেখেছি। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে।