রাকিবুল আওয়াল পাপুল, শেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ শেরপুর সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী দরিদ্র পরিবারের সন্তান অপহৃত সুমন মিয়ার মরদেহ মিললো প্রেমিকার প্রেমিকের বাড়ির মাটির নীচ থেকে। অপহরণের এক সপ্তাহ পরে শেরপুর জেলা শহরের সজবরখিলা মহল্লায় জনৈক ফোরকান পুলিশের বাসার মাটির নীচ থেকে ১১ নভেম্বর মধ্যরাতে সুমনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রেম ঘটিত ঘটনায় খুনের এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শেরপুর পৌরএলাকার বারাকপাড়া নীমতলার নজরুল ইসলামের ছেলে সুমন। শেরপুর সরকারি কলেজে লেখা পড়া করতো। একই কলেজের শিক্ষার্থী শ্রীবরদী উপজেলার কাউনের চরের আজিম মাষ্টারের কন্যা আন্নার সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। আন্না একইসাথে সজবরখিলা মহল্লার ফোরকান পুলিশের ছেলে রবিনের সাথেও প্রেমে জড়িয়ে যায়।
আন্নাকে বিয়ে করতে চায় সুমন। এতে বাধ সাজে রবিন। পথের কাটা দূর করতেই খুন করার সিদ্ধান্ত নেয় ঘাতক রবিন ও আন্না।
পরিকল্পনা করে সুমনকে গত ৪ নভেম্বর শহরের বাগরাকসা কাজিবাড়ি পুকুর পাড় এলাকা থেকে সুমনকে বান্ধবী আন্না, তার প্রেমিক রবিন ও অজ্ঞাতদের সহযোগিতা নিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তাকে খুন করে ঘাগক রবিনদের সজবরখিলা বাসায় পুতে রাখে। এ ঘটনায় সুমনের বাবা নজরুল ইসলাম সদর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে। এরই জেরে ১১ নভেম্বর ভোরে ওই সহপাঠী আন্না ও তার বাবা আজিম মাষ্টারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করে ঘাতক রবিনকে। রবিনের স্বীকারোক্তিতেই একইদিন রাত একটার সময় অপহৃত কলেজ ছাত্রের মরদেহ ফোরকান পুলিশের বাসার মাটির নীচ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এ নির্মম এ ঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসি।
সুমনের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলেকে যেভাবে খুন করা হয়েছে, আমি খুনিদের ফাঁসি চাই।
এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, এরকম একটা ভালো ছেলেকে এভাবে মারা হয়েছে। আমরা এটা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আমরা এর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করছি। ছাত্র শরিফুল ইসলাম বলেন, খুনি যেই হউক, আমরা সকল খুনির ফাঁসি চাই। কেউ যাতে রেহাই না পায়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুবায়দুল আলম বলেন, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা হত্যা কান্ডের সঠিক কারণ নির্নয়ের জন্য লাশ শেরপুর জেলা হাসপাতালে প্রেরণ করেছি।
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো: আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করে লাশ উদ্ধার করেছে। একইসাথে তিনজন আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দোষীদের দ্রুত কঠিন শাস্তির মুখে দাড় করানো হবে।
তুচ্ছ প্রেমের ঘটনায় জঘন্য এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবেন এমনটাই চান শিক্ষক-ছাত্র সবাই।