

মানিক হোসেন, ইবি: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) রাত ৯ টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়ামোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করেন তারা। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ ‘কুয়েটে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘লীগ গেছে যেই পথে, দল যাবে সেই পথে’, ‘নৌকা আর ধানের শীষ, দুই শাপের একই বিষ’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’ ‘লন্ডন না ঢাকা? ঢাকা ঢাকা’ সন্ত্রাসীদের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না’ সহ বিভিন্ন শ্লোগান দিতে দেখা যায়।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা যেই জুলাইয়ে স্প্রিট ধারণ করেছিলাম। তা আজকে কুয়েটে হামলার মাধ্যমে নষ্ট হয়েছে। জুলাইয়ের পরে কেউ স্বৈরাচার হলে তাদের পরিস্থিতি হবে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মতো। বিপ্লবী ছাত্র জনতা তাদের রেহাই দিবে না। আমরা বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করে ছাড়বো। আমরা ক্যাম্পাসে অনেক সন্ত্রাসীদের ছাড় দিয়েছি, আজকের হামলা সেই ছাড় দেওয়ার ফল। ষড়যন্ত্র থেমে নেই। আমাদের সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সন্ত্রাসীদের কোনো পরিচয় নাই। আজকের হামলাকারীদের বিচার ও ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। আমরা কারো বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে দ্বিধা করিনি। এখনো কারো পাখা গজালে ছাত্রসমাজ তাদের ছাড় দিবে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, জুলাইয়ে আমরা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের কথা বলেছি। বর্তমানে ছাত্রদল সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার চেস্টা করলে তাদের বিরুদ্ধেও কথা বলতে আমাদের আপত্তি নেই। কুয়েটে আমাদের ভাইদের উপর ন্যাক্কারজন হামলা করেছে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পরবে। আমরা ইদের পরে আন্দোলন করার ছাত্র জনতা নয়। আমরা মাত্র ৩৬ দিনে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার হাসিনাকে পরাস্থ করেছি।নতুন স্বৈরাচারদের সরাতে আমাদের বেশি সময় লাগবে না। আমাদের সবসময় সচেতন থাকতে হবে। কেউ যেন নতুন করে স্বৈরাচার না হয়ে উঠতে পারে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ হামলা করলে সকলে মিলে প্রতিহত করতে হবে। আমাদের সংগ্রাম শেষ হয়ে যায় নি। স্বৈরাচার চলে গেছে, কিন্তু তাদের দোষর এখনো রয়ে গেছে। নতুন স্বৈরাচারী চরিত্রদের বহাল হতে দেওয়া যাবে না। আমরা কুয়েটে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারের দাবি জানাই। এছাড়াও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে সকল শিক্ষক কর্মকর্তাদের দূর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করার আহ্বান জানাই। বিগত স্বৈরাচারের সময়ে অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা অনেকেই পড়াশোনা করাতে পারে না। পরবর্তী সকল নিয়োগ যোগ্যতার ভিত্তিতে করার দাবি জানাই।
উল্লেখ্য, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্ররাজনীতি বন্ধের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ছাত্রদল ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে।