

মানিক হোসেন, ইবি:আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা অনতিবিলম্বে আওয়ামীলীগের বিচার নিশ্চিত ও নিষিদ্ধের দাবি জানান।
শনিবার (১০ মে) বিকেল পৌনে ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক এবং পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া বাজার পদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারীরা। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট’এর নেতৃত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সহ-সমন্বয়ক তানভীর মন্ডল ও ইয়াসিরুল কবির সৌরভ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তলাবায়ে আরাবিয়ার সাধারণ সম্পাদক শামিমসহ প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘আবু সাঈদের বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাই নাই’, ‘ওয়ান টু থ্রী ফোর, আওয়ামীলীগ নো মোর’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আওয়ামীলীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘২৪ এর বাংলায়, সন্ত্রাসের ঠাই নাই’, ‘দিল্লী না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা’সহ বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ইন্টেরিম সরকার দায়িত্বগ্রহণের প্রায় বছর হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিচার হচ্ছে না। আমরা যখন সরকারের কাছে তাদের নিষিদ্ধের দাবি করছি তখন কিছু দল আওয়ামীলীগের নিষিদ্ধের দাবি থেকে সরে আসছে। আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধের কথা উঠলেই হিংসা হয়। আমরা মনে করছি ঐসকল দল আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ চাচ্ছে না কারণ তাহলে হয়তো তাদের ভোট কমে যাবে। স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ যে গণহত্যা করেছে তার বিচার হতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে এই দাবি বাস্তবায়ন করবে।
এসময় বক্তারা বলেন, বর্তমানের ইন্টেরিম সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল সন্ত্রাসী আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করা। আমরা কোন প্রসেসের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ভারতে পাঠাইনি, আমাদের রক্তের বিনিময়ে এই ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে পরাস্ত করেছি। তবে তাদের নিষিদ্ধ করতে কেনো ইন্টেরিমকে প্রসেস খুজতে হচ্ছে? আর নয় হেলা খেলা এবার হবে ফাইনাল খেলা এই স্লোগান নিয়ে আওয়ামী লীগকে বাচানোর জন্য যারা মাঠে নেমেছিল তারা এখনো ক্যাম্পাসে বুক ফুলে ঘুড়ে বেড়াই। আমরা এই সকল সন্ত্রাসী শিক্ষক ও ছাত্রলীগের সাথে সংশ্লিষ্ট ছাত্রদের অতি তারাতাড়ি ক্যাম্পাস ছাড়া করতে হবে।
সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, জুলাই আন্দোলন যেভাবে ধৈর্যের সাথে আমাদের চালাতে হয়েছে তেমনি আরেকটি আন্দোলন চালাতে হচ্ছে। যা আমাদের আবার ধৈর্যের সাথে চালিয়ে যেতে হবে। আমরা দেখছি কিছু চাওয়া পাওয়া, বুঝা পোড়ার কারণে আওয়ামী প্রশ্নে অনেকে নমনীয়তা দেখাচ্ছে। আমরা আশা করি জুলাই আন্দোলনে তারা যেভাবে কাঁধে কাধ মিলিয়ে আন্দোলন করেছে সেই কাজটিই করবে। আসলে ৫ আগস্টে আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ হয়ে গেছে শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা বাকি। জুলাই গণহত্যা চালিয়ে তারা তাদের বেঁচে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। তাই ইন্টেরিমকে অতিদ্রুত আমাদের তিন দফা দাবি মেনে নিতে হবে। আমাদের দাবি আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করতে হবে। জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।