• আজ ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশকে ৫ বছরের জন্য লিজ চাইলেন জামায়াত নেতা তাহের

| নিউজ রুম এডিটর ৯:৫৮ অপরাহ্ণ | মে ১০, ২০২৫ বাংলাদেশ, রাজনীতি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, ইসলামে সন্ত্রাসের কোনো জায়গা নেই। ইসলাম সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাস করে না। আমরা পাঁচ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমরা আপসহীন থাকবো।

 

শনিবার (১০ মে) বিকেলে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শহীদ আব্দুস সামাদ স্মৃতি ময়দানে কালিগঞ্জ উপজেলা শাখার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জামায়াতের আমির ও সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল ওহাব সিদ্দিকী।

মো. তাহের বলেন, ‘ভারতের আধিপত্যবাদকে বাংলাদেশের মানুষ ভয় পায় না। ভারত মিসাইল ছুঁড়লে আমরা সেই মিসাইল ভারতে পাঠিয়ে দেব। আমরা মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করব। মানুষের বাক স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া হবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে কেয়ারটেকার সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আমরা সংস্কারের কাজ করে যাচ্ছি। আমরা পরীক্ষিতভাবে সৎ। আমরা সৎ লোকের শাসন চাই, আল কোরআনের আইন চাই। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত।’

জামায়াতের এ শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমাদের কমিটমেন্ট থাকবে উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা। সবার জন্য ভাত কাপড় শিক্ষা স্বাস্থ্যের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। সবাই থাকার জন্য ঘর পাবে। ফ্রি শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হবে। আমরা আওয়ামী লীগের শাসন দেখেছি, আমরা বিএনপির শাসন দেখেছি, আমরা জাতীয় পার্টির শাসন দেখেছি। এখন বাকি আছে একটি দল। সেই দলের নাম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আমাদেরকে ভোট দিন, নির্বাচিত করুন, আমরা আপনাদের অধিকার ফিরিয়ে দেব। আমরা এদেশের সব ধর্মের মানুষের সমঅধিকার নিশ্চিত করবো। আমরা নারীর মর্যাদা সমুন্নত করবো।’

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর হাদিস বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘ইসলামে কোনো নারীকে হত্যা করা যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সোনার বাংলার স্লোগান শুনেছি, আমরা ছয়দফার স্লোগান শুনেছি। কিন্তু সোনার বাংলার স্লোগান এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেনি।’

প্রধান অতিথি বলেন, ‘দরকার হলে পাঁচ বছরের জন্য জামায়াতের কাছে বাংলাদেশকে লিজ দিন। আমরা যদি ব্যর্থ হই, তাহলে কান ধরে, ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবেন। আমরা ব্যর্থ হবো না— ইনশাআল্লাহ।’

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘লুটপাট, চাঁদাবাজির কথা বললে একটি বড় দল মাথায় হাত দেন। লুটপাট, দুর্নীতি, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন, গুম, খুন আর অপশাসন চালিয়ে এদেশ থেকে পালিয়ে গেছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নেতা-কর্মীরা। এখন আবার আর একটি দল সেই একইভাবে লুটপাট, চাঁদাবাজি, দখলবাজি শুরু করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’

প্রধান অতিথি এসময় সাতক্ষীরার প্রত্যেকটি সংসদীয় আসনে স্ব-স্ব দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের জন্য নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

কালিগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুর রউফ ও সরকারি সেক্রেটারি মাওলানা আনোয়ারুল ইসলামের পরিচালনায় কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর, কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য হাফেজ মাওলানা মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর শেখ নূরুল হুদা, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান, জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্ম পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি গাজী নজরুল ইসলাম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাস্টার শফিকুল আলম, জেলা ছাত্র শিবিরের নেতা এমামুল ইসলাম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ওমর ফারুক, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাহবুবুল আলম, অফিস সেক্রেটারী মাওলানা রুহুল আমিন,কালিগঞ্জ উপজেলার জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর জিএম আব্দুল গফ্ফার, শ্যামনগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, আশাশুনি উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর আবু মুছা তারিকুজ্জামান তুষার, দেবহাটা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা ওলিউল ইসলাম, শহিদ আরিফুজ্জামানের পিতা আবতাবুজ্জামান, সাতক্ষীরা জেলা ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি এসএম জোবায়ের হোসেন, সাতক্ষীরা শহর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মেহেদী হাসান, সাতক্ষীরা জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আজিজুল ইসলাম প্রমুখ।

এর আগে একই দিন সকালে একই ময়দানে জামায়াতে ইসলামীর মহিলা কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করে সম্মেলনে হাজার হাজর মানুষ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে উপস্থিত
ছিলেন।