

সিরাজদিখান প্রতিনিধিঃমুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার পূর্ব রাজদিয়া গ্রামস্থ নেপচুন কোল্ড স্টোরেজের বিরুদ্ধে ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় ৬ শতাংশ জমি জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘ ২২ বছর ধরে ব্যক্তি মালিকানাধীন ওই সম্পত্তি প্রতিষ্ঠানটি জোরপূর্বক নিজেদের রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল বলে অভিযোগ সম্পত্তির মালিকপক্ষ ও স্থানীয় এলাকাবাসীর।
গত রবিবার এ নিয়ে মালিকপক্ষের রাজদিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে মো. নাহিদ মুরাদ গং বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, মো. নাহিদ মুরাদ গংরা তাঁদের পৈত্রিক ও খরিদসূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি নেপচুন কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক দখল করে সরকারি রাস্তা থেকে উত্তরে ইট ফেলে নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক রাস্তা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসছিল। এতে ৩২ ফুট প্রশস্ত সরকারি রাস্তা প্রায় অকেজো হয়ে পড়ে এবং এর আশেপাশের প্রায় ৫০টি গরিব ও অসহায় পরিবার বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়ে। এমনকি সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে একে অপরের সঙ্গে বিরোধ ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় দেওয়ানি মামলা-মোকদ্দমাও করা হয়। এর আগে বিষয়টি সমাধানের জন্য নেপচুন কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত আবেদন জানানো হলেও এতে তেমন কোনো সাড়া মেলেনি। উল্টো প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার রুহুল আমিন আবেদনকারীকে হুমকি প্রদান করেছেন বলে অভিযোগ করেন অভিযোগের বাদী নাহিদ মুরাদ।তিনি বলেন,“আমরা ইতিমধ্যে ছয়বার নিজেদের টাকা খরচ করে ভূমি পরিমাপ করেছি কোল্ড ষ্টোরেজ কোন টাকা দেয়নি। আমরা প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ ও দায়ীত্বে থাকা ম্যানেজার বরাবর লিখিত আবেদন করেছি এবং প্রশাসনকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি বরং বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করায় নেপচুন কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার রুহুল আমিন হাওলাদার আমাদের মারধরের হুমকি দিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ অক্টোবর উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. মেহেদী হাসান (হিরা)সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে বিরোধপূর্ণ সম্পত্তি পুনরায় পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু রাতের আঁধারে নেপচুন কোল্ড স্টোরেজের কর্মচারী ও শ্রমিকদের দিয়ে সীমানা চিহ্ন মুছে ফেলা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, “প্রতিষ্ঠানটি শুধু ব্যক্তিগত জমি নয়, সরকারি রাস্তার ওপর প্রাচীর নির্মাণ করে প্রায় ৭ ফুট জায়গাও দখলে রেখেছে। এতে এলাকাবাসীর যাতায়াত বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল।” সম্প্রতি প্রশাসনের হস্তক্ষেপে নেপচুন কোল্ড স্টোরেজের দখলে থাকা সম্পত্তির একটি অংশ উদ্ধার হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। ৫০টি পরিবারের দীর্ঘদিনের যাতায়াত সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে সংঘটিত বিরোধেরও অবসান হতে চলেছে বলেও জানা যায়।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজান মোঃ রুহুল আমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার অভিযোগ মিথ্যা। তার সাথে আমার এ বিষয়ে কোন কথাই হয় নাই। এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লিখিত অভিযোগটি তারা পেয়েছেন এবং তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অন্যদিকে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপে সম্পূর্ণ সম্পত্তি উদ্ধার হবে এবং দীর্ঘদিনের দখলদারিত্বের অবসান ঘটবে এমনটাই প্রত্যাশা মালিক পক্ষ ও স্থানীয় এলাকাবাসীর।