
নিজস্ব প্রতিবেদক : ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ এখনো নাজুক ও অনিশ্চিত অবস্থায় রয়েছে বলে মনে করে মানবাধিকার সংগঠন মানুষের জন্য আইনী সহায়তা ফাউন্ডেশন (মাজআস)। সংগঠনটির পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র বিভাজন, পারস্পরিক অবিশ্বাস, রাজনৈতিক সহিংসতা এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে। তাই নির্বাচনী সহিংসতা রোধে ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য সাত দফা দাবিও পেশ করেছে মানুষের জন্য আইনী সহায়তা ফাউন্ডেশন (মাজআস)।
রোববার (১৬নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটেতে ‘নির্বাচনী সহিংসতা রোধে ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান’- শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি পেশ করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক সামসুদ্দোহা পিন্টু বলেন, সরকার একটি শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এটি প্রশংসনীয়। কিন্তু প্রশাসনিক সক্ষমতা ও মাঠপর্যায়ের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে যদি সরকার যথাযথভাবে সতর্ক না থাকে এবং সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেই প্রচেষ্টার ইতিবাচক ফলাফল ব্যাহত হতে পারে।অপর্যাপ্ত প্রস্তুতি বা প্রশাসনিক সমন্বয়ের ঘাটতি, নির্বাচনকালীন স্থিতিশীলতাকে ক্ষুন্ন করতে পারে, যার প্রভাবে সরকারের ইমেজ ও আস্থা সংকট তৈরি হতে পারে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক বিভাজন ও অস্থিরতা, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, পুলিশ সংস্কার কমিশন বাস্তবায়ন না হওয়া, লুণ্ঠিত ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায় ভোটের পরিবেশ কেমন হবে তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।
এসময় সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে নির্বাচনী সহিংসতা রোধ ও ভোটারদের নিরাপত্তার জন্য সাত দফা দাবি পেশ করা হয়।
তা হলো-
১. প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।
২. রাজনৈতিক দলগুলোর ন্যায্য দাবি ও উদ্বেগ সমাধানে জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক বিভাজন দূর করতে হবে।
৩. লুণ্ঠিত ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অবিলম্বে কার্যকর, কঠোর এবং সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করুন, যাতে একটি শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও নিরাপদ নির্বাচন নিশ্চিত করা যায়।
৪. পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করে নির্বাচনের আগে পুলিশকে কমিশনের অধীনে এনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. নির্বাচনকালীন সহিংসতা রোধে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও প্রশাসনকে নিয়ে সমন্বিত নিরাপত্তা কাঠামো গঠন করতে হবে।
৬. রাজনৈতিক অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা, অনৈতিক অর্থব্যবহার রোধে রাজনৈতিক অর্থায়নকে স্বচ্ছ, আইনসম্মত ও মানবাধিকারসম্মত কাঠামোর মধ্যে আনতে হবে।
৭. দলীয় গণতন্ত্র শক্তিশালী করা দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ কমাতে হবে, যাতে ভোটারদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শিগগিরই এসব দাবি লিখিতভাবে প্রধান উপদেষ্টা, নির্বাচন কমিশন ও বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসেও জমা দেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন রাফি, উপদেষ্টা মুহাম্মদ আল-আমিন রাসেল, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির তথ্য-প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন, দৈনিক নয়াদিগন্তের সিনিয়র রিপোর্টার সায়ীদ আবদুল মালিক, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোশারফ হোসেন, সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন পলাশ, পরিচালক বাকিয়া রহমান বাকি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক পরিচালক নাবিলা আক্তার, সহকারী পরিচালক মো. আবির হোসেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা হেনা আক্তার প্রমুখ।






















