• আজ ১২ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেরপুরে হত্যা কান্ডের পর মধ্যযুগীয় কায়দায় চলছে লুটপাট-ভাঙচুর

| নিউজ রুম এডিটর ৬:০১ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ২৪, ২০২৫ সারাদেশ

 

রাকিবুল আওয়াল পাপুল, শেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
শেরপুরের পল্লীতে হত্যাকান্ড ঘটলেই চলছে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা। ঘটনা ঘটার পর পালিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে লুটপাটে লিপ্ত হচ্ছে প্রতিপক্ষ বাদি পক্ষের লোকজন। এতে নিঃশ্ব হচ্ছে বিবাদী ও তাদের স্বজনরা। ভয়ে থানায় সময়মতো মামলা দায়ের না করায় ব্যবস্থা নিতে সমস্যা হচ্ছে পুলিশকে।

শেরপুর সদরের কামারেরচর বাবনা এলাকায় একটি অটোরিক্সা চুরি নিয়ে গনপিটনির ঘটনায় গতবছর ২০ ডিসেম্বর পার্শ্ববর্তী হরিনধরা প্রমানিক পাড়ার হাসমত আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন মারা যায়। এ ঘটনায় দেলোয়ারের স্ত্রী ও কামারেরচর বাবনা গ্রামের সুফিয়া আক্তার বাদী হয়ে ঘটনার পরের দিন ২১ ডিসেম্বর শেরপুর সদর থানায় মৃত আবেদ আলীর ছেলে আঃ মান্নান, আব্দুল খালেক, চাঁন মিয়া ও তোতা মিয়া তাদের সন্তান এবং আত্মীয় স্বজনসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ২৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এঘটনার পর আসামি পক্ষের লোকজন আত্মগোপনে চলে যায়। এ সুযোগে বাদী পক্ষের লোকজন আসামি পক্ষের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও ভাংচুর করে।

এসময় গরু ছাগল, ধান, চাল আসবাবপত্র সেচ মেশিন, অটোরিকশাসহ সবকিছুই নিয়ে যায়। এতে সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা আসামি ও তাদের স্বজনরা।

এসব ঘটনায় এখনো থানায় কোন মামলা করা হয়নি। তবে আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন।

এদিকে স্কুলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে হরিনধরায় একজন নিহত হওয়ার পর বিবাদি পক্ষের বাড়ি ঘরের হামলা চালিয়ে ভেঙে নিয়ে যায় অন্তত দুইশতাধিক ঘর, ৭০টি গরু, ১৮০টি ছাগল, ১০০টি সেচ পাম্প সহ অসংখ্য মালামাল।

চরমুচারিয়া ইউনিয়নে মহিলা মেম্বার নুরুন্নাহার বেগম অভিযোগ করে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর আমরা বাড়ি সব রেখে পালায়। পরে আমরা জানতে পায় বাড়িঘরে লুটপাট করছে বাদীপক্ষের লোকজন। এসে দেখি বাদীপক্ষের লোকজন লুটপাট করে সব নিয়ে যাচ্ছে। বাধা দিতে গেলে আমাদের আক্রমণ করার চেষ্টা করে। আর মামলার ভয় দেখায়। আমরা কিছু করতে পারি নাই পরনের কাপড়ডা ছাড়া সব নিয়ে গেছে। আমরা স্বামী আর ছেলে কিছু করে নাই তাও মামলার আসামী করা হয়েছে।
সুভা আক্তার বলেন, আমাদের খামারে গরু ছিলো ৭ টা। গরুগুলো নিয়ে গেছে। বাড়িঘরে যা আছিলো সব নিয়া গেছে গা। আমরা মামলার ভয়ে পলায় ছিলাম। তারা মামলা দিছে মামলার বিচার হবো। কিন্তু আমাদের জিনিসপাতি কেন নিলো এর বিচার চাই।

জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান, আমি যোগদানের পর দেখি শেরপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি একেবারেই খারাপ ছিলো। পরে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পুলিশ কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চালু করি। এরমধ্যে কতোগুলো হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে। হত্যাকান্ডগুলো প্রতন্ত অঞ্চলে বেশি হয়েছে। শেরপুরে একটা টেন্ড আমি লক্ষ করেছি। খুনের ঘটনা ঘটলে যারা খুনের সাথে জড়িত তারা বাড়ি থেকে পলাতক থাকে। এসময় যারা ভিকটিম বা থার্ট পার্টির লোকজন থাকে তারা গিয়ে আবার লুটপাট করে থাকে। আমরা কিন্তু যতগুলা লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর মামলাও নিয়েছি। এসব ঘটনায় যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছি যাতে তাদেরও বিচার হয়।