মাহমুদ সানি,রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ৭নং বামনী ইউপির ৯নং ওয়ার্ড পূর্ব সাগরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল মাঠ ও এলাকার সৌন্দর্য নষ্ঠ করে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরুর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
বুধবার বিকেলে বিদ্যালয়ের মাঠে ঘন্টা ব্যাপী এ মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। স্কুলের পর্যাপ্ত জায়গা চারদিকে পড়ে থাকা সত্বেও ক্ষুদ্র খেলার মাঠে স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণের ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতায় এমন সিদ্ধান্ত মানতে পারছে না এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া অভিভাবক আনোয়ার গাজি বলেন, স্কুলের মাঠটির সাথে একটি মসজিদ, কবরস্থান ও মাদ্রাসা সংযুক্ত রয়েছে। মাঠের মধ্যে ভবনটি নির্মিত হলে মাঠটি আর অবশষ্টি থাকবে না। এ ক্ষেত্রে এলাকাবাসী খেলাধুলা ও শরীরচর্চার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।
শিশুরা পড়ালেখা শিখলেও তাদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। এ কারণে আমরা চাই প্রয়োজনে সকলে মিলে টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের নামে পুরাতন ভবনের পাশের দুই শতাংশ জমি কিনে দেবো। তবু মাঠটি যেনো বেঁচে থাকে। ওই স্থানে ভবনটি হলে সবগুলো প্রতিষ্ঠানই মাঠটি ব্যবহার করতে পারবেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী আব্দুল কাদের, আব্দুর রহমান, সোহাগ হোসনে বলেন, আমাদের খেলাধুলার জন্য বাড়ি বা এলাকায় কোনো মাঠ নেই। এটি দখল করে ভবন নির্মাণ করলে আমাদের আর খেলার জায়গা থাকবেনা। মাঠ যেমন আমাদের, তেমনি ভবনটিও আমাদের জন্যই। তাই স্যারদের কাছে আমরা অনুরোধ জানিয়েছি যেনো মাঠটিকে বাঁচিয়ে রেখেই বিকল্প স্থানে ভবনটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক অভিভাবক জানান, অত্র স্কুলের অদক্ষ প্রধান শিক্ষক মোহছেন হোসেন এর বিভিন্ন ধরনের দূনীতির কারনে এই স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করছে না এলাকাবাসী। ছাত্র-ছাত্রীর হাজিরা খাতায় অতিরিক্ত ছাত্র-ছাত্রীর নাম দেখিয়ে উপবৃত্তির টাকা আতœসাৎ,স্কুলের জায়গা থেকে ড্রেজিং মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি,স্কুলের নামে আসা বিভিন্ন বরাদ্দকৃত টাকা আতœসাৎ অভিযোগ রয়েছে। অনতিবিলম্বে এই শিক্ষকের অপসারণ দাবি জানান। এবং চারদিকে বেদখল হয়ে থাকা স্কুলের নিজস্ব জমিন উদ্ধার করে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানান তারা।
পূর্ব সাগরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহছেন হোসনে বলনে, তাঁদের দাবিটি যৌক্তিক। আমরা বিদ্যালয়ের পাশের একখন্ড জমি নেওয়ার চেষ্টা করছি। জমিটি না হলে মাঠের অনেক অংশ নিয়েই ভবনটি করতে হবে। ভবন করতে হলে এক্ষেত্রে হয়তো কোনো বিকল্প পথ আমাদের থাকবে না। এছাড়া আমার বিষয়ে যেই সকল অভিযোগ করা হয়েছে এগুলো মিথ্যা বানোয়াট।
বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হাবিব উল্লা মিয়া বলেন, স্থান সংকটের কারণে মাঠের একটি অংশের মধ্যে ভবনটি নির্মাণ করতে হচ্ছে। মাঠ বাঁচাতে গেলে নতুন ভবনটি করা সম্ভব হবে না। আমরাও চেষ্টা করছি মাঠটি যতোটুকু সম্ভব বাঁচিয়ে রাখতে।
ওই এলাকার দায়ত্বিপ্রাপ্ত সহকারী উপজলো শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, প্রায় এক মাস আগে আমি এ এলাকার দায়িত্বি পেয়েছি। বিষয়টি সর্ম্পকে পুরোপুরি জানা নেই। তবে ভবন করার জায়গা থাকলে কোন ভাবেই মাঠটি নষ্ট করা হবে না।