• আজ ৩রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি

| নিউজ রুম এডিটর ৬:৪৮ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ১৬, ২০২২ লালমনিরহাট, লিড নিউজ, সারাদেশ

আজিজুল ইসলাম বারী, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটে পুলিশের হেফাজতে রবিউল ইসলাম খান (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ ও শোক প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা সাংসদ জিএম কাদের। তিনি বলেছেন, ‘তরতাজা এক যুবক অকালে প্রাণ হারালো। এই বিষয়টি সারা দেশের জন্য অশুভ সংকেত। পুলিশ হেফাজতে এ ধরনের প্রাণ হারানো দুঃখজনক।’

শনিবার(১৬ এপ্রিল) দুপুরে লালমনিরহাটের মহেন্দ্রনগর কাজিচওড়া গ্রামে নিহত রবিউল ইসলামের শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে এসে এসব কথা বলেন তিনি।

এ ঘটনায় পুলিশের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির কার্যক্রম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘কমিটির সদস্যগণ অভিযুক্তদের সহকর্মী হওয়ায় এর নিরেপক্ষতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’ তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি করেন। এ ছাড়া নিহতের পরিবারকে প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা ও যোগ্যতা অনুযায়ী স্ত্রীকে চাকরির আশ্বাস দেন জিএম কাদের। এ সময় জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক জাহিদ হোসেন লেমনসহ জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জাপা চেয়ারম্যান স্থানীয় প্রশাসনের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, এ ঘটনায় ঊর্দ্ধতন কর্তপক্ষের ভুমিকা আমাকে ব্যাথিত করেছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান কাজ জনগনের জান-মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা বিধান করা। অথচ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করেছেন কয়েকজন। দায়িত্বশীল অফিসার হিসেবে এটা করা ঠিক হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভুলের ঊর্ধে নয়। দুুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। দায়িশীল অফিসার হিসেবে দ্রুত তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ ছিল। তাহলে সাধারন মানুষ বিচারের দাবিতে সড়কে নামত না। ন্যায় বিচার পাওয়া মানুষের নাগরিক অধিকার।

এর আগে জিএম কাদের লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশের হেফাজতে মৃত রবিউল ইসলাম খানের পরিবারের সাথে কথা বলেন এবং শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জ্ঞাপন করে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেন। এরপর নিহতের কবর জিয়ারত করে চলে যান জিএম কাদের।

উল্লেখ, গত বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দিনগত রাতে বৈশাখী মেলায় জুয়া খেলা সন্দেহে রবিউল ইসলামকে আটক করে সদর থানা পুলিশ। এর কিছুক্ষণ পরে সদর হাসপাতালে রবিউলের মৃত্যু হয়। নিহতের পরিবারের দাবি পুলিশের নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের লাথিতে গোপনাঙ্গে আঘাত পান তিনি। এ ঘটনায় বিচার দাবিতে টানা দুই দিন মহাসড়কের অবরোধ করে বিক্ষোভ করে স্থানীয়রা। ফলে অভিযুক্ত সদর থানার এসআই হালিমকে শুক্রবার দুপুরের দিকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) আতিকুল হককে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ঘটনা করা হয়।

নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোন মামলা হয়নি। তবে সদর থানা পুলিশ এ ঘটনায় একটি অপমৃত মামলা দায়ের করেছে। তবে খুব দ্রুত সময় আদালতে মামলা দায়ের করা হবে বলেও নিহতের পরিবার নিশ্চিত করেছেন।