• আজ ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাবেক এমপি রেদোয়ানের গুলিতে আহত ২

| নিউজ রুম এডিটর ৭:০৫ অপরাহ্ণ | মে ৯, ২০২২ সারাদেশ

কুমিল্লার চান্দিনায় সাবেক এমপি রেদোয়ান আহমেদের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় রেদোয়ানের গুলিতে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ ঘটনায় রেদোয়ানকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সোমবার দুপুর আড়াইটায় চান্দিনা উপজেলা সদরের রেদোয়ান আহমেদ কলেজ ক্যাম্পাস-২ মমতাজ আহমেদ ভবনের মিলনায়তনে এলডিপি’র ঈদ পুনর্মিলনী ও ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের যৌথ কর্মীসভাকে কেন্দ্রে করে ওই ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর রেদোয়ান আহমেদ থানায় আশ্রয় নিলে উত্তেজিত ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মীরা চান্দিনা থানার প্রধান ফটক ঘেরাও করে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এছাড়া ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

আহতরা হলেন- চান্দিনা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা রূপনগর এলাকার বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে মাহমুদুল হাসান জনি সরকার (২৮)। সে কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। অপরজন হলেন- চান্দিয়ারা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হোসেন নাঈম (২৮)। সে বরকইট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী। আহত দুই জনকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী শরীফ জানান, চান্দিনা পৌরসভা কার্যালয় সংলগ্ন রেদোয়ান আহমেদ কলেজ ক্যাম্পাস-২ মমতাজ আহমেদ ভবনের সামনে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান করছিল। দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে রেদোয়ান আহমেদ গাড়ি নিয়ে ক্যাম্পাসের সামনে আসার পর কলেজ গেইটে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতারা রেদোয়ান আহমেদের গাড়ি থামিয়ে কথা বলে।

কিছুক্ষণ পর রেদোয়ান আহমেদ গাড়ি ঘুরে চলে যাওয়ার সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা ওই গাড়িতে তরমুজ দিয়ে ঢিল মারে। এ সময় রেদোয়ান আহমেদ গাড়ি থেকে পরপর দুইটি গুলি ছুড়ে।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সামিরুল খন্দকার রবি জানান, চান্দিনা রেদোয়ান আহমেদ কলেজ ছাত্রলীগ ঈদের পূর্ব থেকে সোমবার ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করতে প্রস্তুতি নিয়েছে। এরই মধ্যে পৌর এলডিপিও একই দিন একই স্থানে ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করে। সোমবার দুপুর থেকে ছাত্রলীগের আয়োজনে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা যখন মমতাজ আহমেদ ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করে ঠিক দুপুর আড়াইটায় দিকে রেদোয়ান আহমেদ গাড়ি নিয়ে ওই ক্যাম্পাসের সামনে এসে গাড়ি থেকে ২টি গুলি করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে থানায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। রেদোয়ান আহমেদের গুলিতে জনি ও নাজমুল গুলিবিদ্ধ হয়। তাদেরকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা কাজী আখলাকুর রহমান জুয়েল জানান, রেদোয়ান আহমেদ রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করতে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিক ভাবে গুলি চালিয়েছ।

সাবেক এমপি ড. রেদোয়ান আহমেদ জানান, আমাদের পূর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রাম ছিল। আমাকে প্রধান অতিথি করে চিঠির মাধ্যমে পৌর এলডিপি কার্যক্রম পরিচালনা করে। এরই মধ্যে আমাদের প্রধান ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে প্রোগ্রাম করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। আমরা ক্যাম্পাস-২ মমতাজ আহমেদ ভবনে পূর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রাম করার কথা। দুপুরে ক্যাম্পাস-২ এর সামনে গেলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের লোকজন আমার গাড়িতে হামলা করে। আত্মরক্ষার্থে আমার লাইসেন্স করার শর্টগান দিয়ে গুলি চালাই। কার গায়ে গুলি লেগেছে বলতে পারব না। পরে থানায় এসে আশ্রয় নেই।

এ ব্যাপারে কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দাউদকান্দি সার্কেল) মো. ফয়েজ ইকবাল জানান, পাবলিক রোষানলে রেদোয়ান আহমেদ থানায় আশ্রয় নিতে আসলে আমরা তাকে আটক করি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।