কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত বেসরকারি ফলাফলে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি সাবেক মেয়র ও ঘুড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো নগরপিতা নির্বাচিত হলেন।
এর আগে ২০১৭ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন সাক্কু। এমনকি ২০১২ সালে কুমিল্লার প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী আফজল খানকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন সাবেক এই নগরপিতা।
বুধবার (১৫ জুন) রাতে ভোটগণনা শেষে ১০৫টি কেন্দ্রের ফলাফল জানা গেছে। ১০৫টি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট। তার সবচে’ কাছের প্রতিদ্বন্দ্বী ঘুড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৯৬৭ ভোট। মাত্র ৩৪৩ ভোটের ব্যবধানে হারলেন সাক্কু।
এর আগে বিকেল ৪টায় শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় ভোটগ্রহণ। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এদিন সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীনভাবে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
এদিকে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তিনি আরও বলেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে, শান্তিপূর্ণভাবে এবং কোনোরকম সংঘর্ষ ছাড়াই শেষ হয়েছে। বৃষ্টিপাতের কারণে দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণে বিঘ্ন ঘটেছে। এছাড়া আমাদের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৬০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। ইভিএমের মাধ্যমে ভোট হয়েছে।
জানা গেছে, কুমিল্লা সিটির পাশাপাশি পাঁচটি পৌরসভা, চারটি উপজেলা পরিষদ এবং দেড় শতাধিক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকেই ভোটাররা কেন্দ্রে আসতে শুরু করেন। তবে কুমিল্লার বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিত বেশি। নির্বাচন চলাকালে কোথাও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।
সারা দেশের দৃষ্টি এখন কুসিক নির্বাচনের দিকে। কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের অধীনে প্রথম নির্বাচন এটি। তাই নির্বাচনে কোনো ধরনের ফাঁক রাখেনি কমিশন। যেকোনো নির্বাচনের তুলনায় বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয় এই নির্বাচনে।
এবার নির্বাচনে পাঁচজন মেয়রপ্রার্থী ছিলেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত, মনিরুল হক সাক্কু (স্বতন্ত্র), মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সার (স্বতন্ত্র), ইসলামী আন্দোলনের মো. রাশেদুল ইসলাম এবং কামরুল আহসান বাবুল স্বতন্ত্র প্রার্থী। মেয়র প্রার্থী ছাড়াও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১০৬ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতর সূত্রে জানা গেছে, এবার নির্বাচনে মোট ভোটার দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ১৭ হাজার ৯২, পুরুষ ভোটার এক লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন। আর দুজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার।
মোট ১০৫টি কেন্দ্রের ৬৪০টি কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।