![](https://peoplesnews24.com/wp-content/uploads/2022/06/7557e0b8ce493d097e7c933ea882f6e5c143b2a5afbe5259.jpg)
![](https://peoplesnews24.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
স্বপ্নের পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য যেদিন উন্মুক্ত করা হয় সেদিন রাতেই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ঝরে যায় তরতাজা দুই যুবকের প্রাণ। দুর্ঘটনার প্রাথমিক কারণ হিসেবে সবাই বেপরোয়া গতিতে বাইক চালানোর সমালোচনা করে। তখন একটি ভিডিও প্রকাশ হয়। যেখানে দেখা যায়, বাইকের গতি ছিল ঘণ্টায় ১০৫ কিলোমিটার। কিন্তু নতুন আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেল, শুধু দ্রুতগতির জন্য নয়, বরং ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে সেতুর মাঝ বরাবর দাঁড়িয়ে ছবি তোলার কারণেই পদ্মা সেতুতে অকালে ঝরেছে দুটি প্রাণ।
সেতু উদ্বোধনের দ্বিতীয় দিন রোববার (২৬ জুন) রাতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার নতুন ওই ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। আর তাতেই জন্ম হয়েছে নতুন প্রশ্ন।
স্বপ্নের সেতু পদ্মা বাঙালিকে আনন্দের জোয়ারে ভাসালেও এরই মধ্যে জন্ম দিয়েছে বিষাদেরও। উদ্বোধনের পরদিনই বাইক চালিয়ে সেতু পার হতে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতির শিকার হতে হয় দুই তরুণকে। দ্রুতগতির বাইক থেকে ছিটকে পড়ে মারাত্মক আহত হন আলমগীর ও ফজলু নামে দুই তরুণ। উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনার পর থেকেই অভিযোগের তীর ছিল মৃত দুই তরুণের দিকে। বলা হয়, বাইকটি দ্রুতগতির হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হন চালক।
তবে ৬ দিনের মাথায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিলেছে দুর্ঘটনার নতুন ভিডিও। ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের স্লো মোশনের ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, ব্যস্ত রাস্তায় ছুটে চলছে দুটি বাইক। বাইক দুটির ডানে চলন্ত একটি কাভার্ডভ্যান এবং বায়ে পার্ক করা ছিল একটি ব্যক্তিগত গাড়ি। প্রথম বাইকটি একই গতিতে সামনে এগিয়ে যেতেই সংঘর্ষ হয় গাড়ি থেকে নেমে সেতুর প্রায় মাঝ বরাবর দাঁড়িয়ে থাকা তিন ব্যক্তির সঙ্গে। সংর্ঘষের পরও প্রথম বাইকটি নিজেদের বাঁচিয়ে নিতে পারলেও দুর্ঘটনা কবলিত ওই তিন ব্যক্তিকে বাঁচাতে গিয়ে উল্টে যায় দ্বিতীয় বাইকটি। যার পরিণতি অকালে ঝরে যাওয়া দুটি প্রাণ আলমগীর ও ফজলু।
বাইক দুর্ঘটনার নতুন ভিডিও প্রকাশের পর সমালোচনার ঝড় ওঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে ব্যস্ত সেতুর মাঝ বরাবর দাঁড়িয়ে ছবি তোলাকে দায়ী করা হচ্ছে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার জন্য।
নিহত আলমগীর ও ফজলু ঢাকার নবাবগঞ্জের বাসিন্দা। আলমগীর পেশায় মোটরসাইকেল মেকানিক এবং ফজলু ছিলেন প্রবাসী। পদ্মা সেতু খুলে দেয়ায় তিনটি মোটরসাইকেলে ৬ বন্ধু মিলে ঘুরতে গিয়েছিলেন তারা।
গত শনিবার (২৫ জুন) স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই দিন জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধ থাকলেও পরদিন ভোর থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় পদ্মা সেতু।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচলের প্রথম দিনই রোববার (২৬ জুন) মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় রাতে সেতুর ২৭ ও ২৮ নম্বর পিলারের মাঝখানে দুই বন্ধুর প্রাণ ঝরে যায়।
মোটরসাইকেল চালানোর সময় যে ভিডিও করা হয় তাতে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন আলমগীর আর পেছনে বসে ভিডিও করছিলেন ফজলু। অতিরিক্ত গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে সব গাড়িকে ওভারটেক করেন তারা। সেতুর ওপর ৬০ কিলোমিটার গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর নির্দেশনা থাকলেও তারা তা ভঙ্গ করে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। ধীরে ধীরে মোটরসাইকেলের গতি ৯০, ৯৫, ১০০ থেকে ১০৫ পর্যন্ত ওঠতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর সেই গতি কমে নেমে আসে ৭০-এ। এরপরই হঠাৎ ডানে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্রাকের সামনে পড়ে যায়। এতে গুরুতর আহত হন চালক ও আরোহী। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আনা হয়। রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।