ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ব্যবহারে অনুপযোগী পঁচা ইটে রাস্তা নির্মাণ করার সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিককে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ ও দেখে নেয়ার হুমকি দেন ঠাকুরগাঁওয়ের এক ঠিকাদার। পরবর্তিতে সেই অডিও রেকর্ডটি ছড়িয়ে পড়লে জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে নির্মাণ কাজে অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান নির্বাহী প্রকৌশলী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তার কাজ করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। এসময় ব্যবহারে অনুপযোগী ও নিম্নমানের ইট বিছানো হয় সড়কের । ট্রাক্টরে করে আনা ইটের খোয়ার বিপরীতে ফেলা হয় রাবিস। তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করেন শ্রমিকরা।
নিন্মমানের ইট দিয়ে কাজ চলমান রাখায় স্থানীয়রা গনমাধ্যমকর্মীদের খবর দেয়। এসময় কয়েকজন সংবাদকর্মী ঘটনাস্থলে গিয়ে চিত্র ধারন করতে গেলে বাঁধা দেয় ঠিকাদারের লোকজন। বাধাঁ উপেক্ষা করে চিত্র ধারনের পর ফিরে আসলে কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার মুরাদ হোসেন সংবাদকর্মী কুঞ্জ পালকে ফোন করে গালমন্দের পর দেখে নেয়ার হুমকি দেন।
ঠিকাদার মুরাদ হোসেনের গালমন্দ ও হুমকি দেয়া অডিও রেকর্ড থেকে শোনা যায়, কুন্ডু পাল তোর বাসা কথায়, তোকে দেখা করতে বলছিলাম, তুই আমাকে চিনিস আমি চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি ঠাকুরগাঁও জেলার আট বছর থেকে। রমেশ কাকা (ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য) আমাকে ছেলে মত মানে। টিটো দত্ত (সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান) আমার বন্ধু। আমি ভাটা সমিতির সভাপতি। আপেলকে (ঠাকুরগাঁও জেলা যুবলীগের সভাপতি) চিনিস? আপেল মোর ছোট ভাই। তুই আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করছিস। তোর থেকে বড় সাংবাদিক জন্ম দেই। রাতে আবার ধংস করি। তুই মনে করিস না আমি ভেসে আসছি। তুই পত্রিকায় দিবি কি হবে। সারা বাংলাদেশে এভাবেই কাজ চলছে। ভাটা সমিতিতে ভোটে হয়েছি রমেশ বাবু (এমপি) আমাকে আটকাতে পারেনি। এছাড়াও তিনি বলেন কর কত নিউজ করবি তোকে দেখে নিবো। পাঁচ মিনিট নয় সেকেন্ডে অডিওতে আরো অভন্দ্র ভাষায় কথা বলেন ঠিকাদার। আর এমন অডিওটি ছড়িয়ে পড়লে জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও রিপোর্টাস ইউনিটির সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার হাসিনুর রহমান বলেন, অডিওটি শুনেছি, একজন ঠিাকাদার ও সমাজের ভদ্র লোক হিসেবে যাকে সবাই চিনে তার কাছ থেকে এমন আচরন কাম্য নয়। নির্মাণ হওয়া কাজ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে ঠিকাদার মুরাদ হোসেনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ঠাকুরগাঁও জেলা এলজিইডি শাহারুল আলম মন্ডল জানান, প্রায় ৪৫ লাখ টাকা ব্যায়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে কাজটি নির্মাণের দায়িত্ব পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান (এম এইচ আর আই) যা প্রেপাইটর মুরাদ হাসান। কাজটির মেয়াদ শেষকাল ২০২২ সালের মে মাসে। কাজটি নির্মানে অভিযোগ পেয়েছি দ্রুত সময়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।