• আজ ১০ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 ৫ আগস্টের আগের তত্ত্বে বিচার চলবে না: অ্যাটর্নি জেনারেল | ঢাকাসহ ৩ বিভাগে বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস | নতুন দলে সব পক্ষের মন জোগাতে শীর্ষ পদের সংখ্যা বাড়ছে, চলতি সপ্তাহে আত্মপ্রকাশ | রোজা ১ মার্চ হলে ৩৩ বছর পর ঘটতে পারে ‘বিরল’ যে ঘটনা | ভাষা শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা | মোহাম্মদপুরে যৌথবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলি, নিহত ২ | শুনানিতে বেশি কিছু বলার দরকার নেই: আইনজীবীকে পলক | আপাতত আ. লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই: আসিফ | উত্তরায় দম্পতিকে কোপানোর ঘটনায় পুরো চক্র গ্রেপ্তার | শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ২০ এপ্রিলের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ |

তুমি চিঠি দাও না পত্র দাও না- এ গানেই বেঁচে আছে বাউল শিল্পী মরহুম আবেদ আলী

| নিউজ রুম এডিটর ৯:২৫ পূর্বাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৩ গান, বিনোদন
মোঃ মাইন উদ্দিন : তুমি চিঠি দাও না পত্র দাও না আমি দাসীর খবর লও না কঠিন তোমার খিয়া, গিয়াছো ভুলিয়া রে বন্ধু, গিয়াছো ভুলিয়া- জনপ্রিয় এই গানটি শুনছেনা এমন মানুষ খুব কমই আছে। কিন্তু গানটার রচয়িতা কে এটা আমরা ক’জনেই- বা জানি।
উপরোক্ত গানটির রচয়িতা বাউল শিল্পী মরহুম আবেদ আলী। স্রষ্টার সৃষ্টির জাদুর অপার রহস্য জানতে যুগে যুগে অসংখ্য মুনি, ঋষি, পীর-আউলিয়া, বাউল, লেখক, কবি, সাহিত্যিক ও দার্শনিকের আবির্ভাব হয়েছে পৃথিবীতে। স্রষ্টা এবং তাঁর সৃষ্টিকে জানার আগ্রহ আজও অব্যাহত রয়েছে মানুষের মাঝে। এরকমই এক নিভৃতচারী বাউল ছিলেন মরহুম আবেদ আলী।
মরহুম আবেদ আলী দেহতত্ত্ব, আত্মতত্ত্ব কামতত্ত্ব, পারঘাটাতত্ত্ব, গুরুতত্ত্ব, শিষ্যতত্ত্ব, সৃষ্টিতত্ত্ব, প্রেমতত্ত্ব প্রভৃতি নিদর্শনের মধ্যে তালাশ চালিয়ে মহিমান্বিত স্রষ্টার অস্তিত্ব খুঁজেছে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। তার লেখা প্রেমতত্ত্ব গানের মধ্যে- “তুমি চিঠি দাও না পত্র দাও না” গানটি ছিল সব থেকে জনপ্রিয়। গানটি আমি ১৯৮৪ সালে তার নিজের কণ্ঠে প্রথম শুনেছিলাম আমার নিজ এলাকা কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার সালুয়া ইউনিয়নের চরকামালপুর গ্রামে মোঃ সুলতান উদ্দিন ভূঁইয়া ওরুফে টুলি মৌলভীর বাড়িতে। আমি তখন ছোট হলেও গানের সারকথা বুঝতে কোনো অসুবিধে হয়নি।
আবেদ আলী যখন এ গানটি মধ্যরাতে লম্বা সুরে টান দিতেন তখন নারীর কোমল মনে আগুন জ্বলে উঠতো। কারণ এ গান জুড়ে রয়েছে প্রিয়জনের প্রতি নারীর আকুতি।
গানটির রচয়িতা আজ আর আমাদের মাঝে নেই। তার অবর্মানে এ গান অনেকে গাইলেও তার মতো আর হয় না। তবে তারই সুযোগ্য পুত্র বর্তমান প্রজন্মের বাউল শিল্পী লিটন সরকার গানটি গাইলে অনেকটাই তার পিতা মরহুম আবেদ আলীর মতই হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলো এ গান আর পাবো কোথায়? বাউল গানের আসর তো এখন আর আগের মত গ্রামে-গঞ্জে খুব বেশি হয় না। অথচ এক সময় বাংলাদেশের লোকসাহিত্যের একটা শক্তিশালী মাধ্যম ছিল বাউল গান।
ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, পঞ্চাশ ষাটের দশকে বাংলাদেশের বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের গ্রামে গ্রামে বসত বাউল গানের আসর। সেই আসরে পাল্লা দিয়ে গুরু-শিষ্য অথবা অন্য কোন পালা নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা চলতো বাউল গান। আর হাজার হাজার দর্শক শ্রোতা মনমুগ্ধ হয়ে এ বাউল গান উপভোগ করতেন।
বাউল শিল্পী মরহুম আবেদ আলী গানের আসর ছাড়াও বাংলাদেশ বেতারে অনেক গান গেয়েছেন। তিনি বাংলা ১৩২৮ সনে বৃহত্তর ময়মনসিংহের নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার গন্ডা ইউনিয়নের বৈশ্বপাট্টা গ্রামে তার মা আদরীর কুলে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ছিলেন জমত আলী।
অজপাড়া গাঁয়ে জন্মগ্রহণ করা শিশু আবেদ আলী হাটি হাটি পা পা করে বেড়ে উঠে বাংলার আলোচিত বাউল শিল্পী আবেদ আলী হয়ে ১৯৯৭ সালের ২৫ এপ্রিল মৃত্যু বরণ করেন।
প্রখ্যাত এ বাউলের মৃত্যুবার্ষিকীতে তার স্মরণে নিজের গ্রাম বৈশ্বপাট্টাতে প্রতিবছর এপ্রিল মাসের ২৫ তারিখ বাউল মেলার আয়োজন করা হয়। বিশাল এ বাউল মেলায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দেশ বরেণ্য বাউল শিল্পীরা এসে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাউল গান পরিবেশন করেন।