• আজ ২৬শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার | কুড়িগ্রামে তিস্তায় নিখোঁজের একদিন পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার | বাংলাদেশের ওপর ভারতের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব নির্ভরশীল: নাহিদ ইসলাম | ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে ট্রাম্প-নেতানিয়াহু | চট্টগ্রামে প্রথম দুই ব্যক্তির শরীরে জিকা ভাইরাস শনাক্ত | তাজিয়া মিছিলে হাজারো মানুষ, সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী | আজ ১০ই মহররম, পবিত্র আশুরা | নতুন বাংলাদেশে মাফিয়াতন্ত্রের সরকার গড়তে দেওয়া হবে না: নাহিদ ইসলাম  | শুধু ক্ষমতা পরিবর্তনের জন্য জুলাই আন্দোলন হয়নি: নাহিদ ইসলাম | কুমিল্লায় ধর্ষণের শিকার নারীকে নিরাপত্তা ও চিকিৎসার নির্দেশ |

আঁধার পেরিয়ে বৈভব সূর্যের উদয়

| নিউজ রুম এডিটর ৯:১২ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ২৯, ২০২৫ ক্রিকেট, খেলাধুলা

 

স্বপ্নের পেছনে ছুটতে গিয়ে শৈশবে সংসার বুঝে গেছে বৈভব সূর্যবংশী। জমি তো মায়ের মতো। সারা বছর অন্ন জোগায়। বোধ-বুদ্ধি হতেই সেই জমি বিক্রির সাক্ষী সে। বাবার কাজ ছেড়ে দেওয়া, সংসারে অভাব নেমে আসা দেখেছে। ১৪ বছর বয়সে মাত্র ৩৫ বল খেলে আইপিএলে রেকর্ড গড়ে সেঞ্চুরির সময় বৈভবের চোখে হয়তো ভাসছিল, বাবার জায়গায় ভাইয়ের পরিবারের হাল ধরার দৃশ্য।

ম্যাচ জয়ের পর স্মৃতির সেই ঝাপি খুলে দিয়েছে বৈভব, ‘আমাদের সংসার খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গেছে। বাবা কাজ ছেড়ে দিলেন আমার অনুশীলনের জন্য। মা রাতে তিন ঘণ্টা ঘুমাতেন। রাতে উঠে আমাদের অনুশীলনে যাওয়ার জন্য খাবার প্রস্তুত করতে হতো তাকে। বাবার কাজ ভাই করতে শুরু করলেন। আমি আজ যা কিছু তাদের জন্য।’

বৈভবের প্রতিভা, পরিশ্রমের গল্প সবচেয়ে কম বয়সে আইপিএলের নিলামে জায়গা পাওয়ার ও ১ কোটি ১০ লাখ রুপিতে দল পাওয়ার পরই চাউর হয়েছিল। সবচেয়ে কম বয়সে আইপিএলে অভিষেক হয় তার। এরপর সবচেয়ে কম বয়সে আইপিএল ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক বনে গেছে তরুণ এই বাঁ-হাতি ব্যাটার।

এই তরুণকে প্রস্তুত করেছেন বিহারের এক একাডেমির কোচ মানিশ ওঝা। মাজাঘষা করেছেন ভারতের ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমি ও অনূধ্র্ব-১৯ দলের কোচ ভিভিএস লক্ষ্মণ। আর তাকে আত্মবিশ্বাস দিয়ে, সময় ও সুযোগ দিয়ে তারকা বানিয়ে দিয়েছেন রাহুল দ্রাবিড়। ছোট্ট বৈভবও যে শিখে গেছেন ক্যারিয়ার, ত্যাগ প্রত্যয়গুলো।

যার ব্যাখ্যা পাওয়া যায় মনোজ ওঝার কথায়, ‘খাসি ও মুরগির মাংস দেখলে সে পাগল হয়ে যায়। যতই দেন না কেন, সাবাড় করে দেবে। সে খেতও খুব মজা করে। যে কারণে ওর চেহারায় নাদুসনুদুস ভাবটা এখনো রয়ে গেছে। কিন্তু এখন সে খাসির মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে, ডাক্তারের নির্দেশ। পিজ্জা আর খায় না। ওইটুকু ছেলের জন্য এগুলো কঠিন। কিন্তু কারণটা সে বুঝতে শিখেছে।’

বৈভবকে আইপিএল নিলামের ঠিক আগে ট্রায়ালে ডেকেছিল রাজস্থান রয়েলস। রাহুল দ্রাবিড়ের কাছে তাকে পাঠিয়েছিলেন লক্ষ্মণ। তাকে অনূর্ধ্ব-১৯ দলেও ডেকেছিলেন লক্ষ্ণণ। সেখানে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৬ করে রান আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে কেঁদেছিল বৈভব। লক্ষ্মণ তাকে বলেছিলেন, ‘আমরা শুধু রান দেখি না, দক্ষতা-প্রতিভাও দেখি।’

বৈভব আইপিএলে মাত্র ৩ ইনিংস খেলেছেন। অভিষেকেই প্রথম বলে ছক্কাসহ ঝড়ো ইনিংসে আগমণী বার্তা দেয়। এমন একজনকে এতো দেরিতে কেন খেলালেন ভারতের হয়ে টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ী কোচ দ্রাবিড়। ব্যাখ্যায় রাজস্থান কোচ বলেন, ‘সে অনুশীলনে খুব ভালো করছিল। কিন্তু আমরা তাকে আইপিএলের পরিবেশ, চাপ, ম্যাচ পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত করতে চাইছিলাম। সরাসরি তাকে আইপিএলের মতো দর্শকভরা মঞ্চে নামিয়ে দিলে হিতে বিপরীত হতে পারত। আমরা চাইনি সে ভয় পাক।’ বৈভব অবশ্য সেঞ্চুরি করেই বলেছে, ‘আমি ভয় পাই না।’