• আজ ২৩শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামে বৃষ্টি-বন্যাতে ৩ কোটি ২৬ লক্ষ টাকার কৃষির ক্ষয়ক্ষতি

| নিউজ রুম এডিটর ৩:৪৯ অপরাহ্ণ | জুন ৪, ২০২৫ কুড়িগ্রাম, সারাদেশ

হুমায়ুন কবির সূর্য, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে অতিরিক্ত বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে প্রায় ৩শতাধিক হেক্টর কৃষিজমি আক্রান্ত হয়েছে। এতে সম্পূর্ণ ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ১৩৪ হেক্টর জমিতে। এরফলে ১ হাজার ৯৫৭জন কৃষকের ৩ কোটি ২৬লক্ষ ১৬ হাজার ৯শ’ টাকার ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য মতে, চলতি সপ্তাহে তিস্তা নদীর পানি সতর্কসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে ব্রহ্মপূত্র নদের পানি সমতলে বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করেছে এরফলে নদ-নদী অববাহিকায় অবস্থিত নীচু চরের জমিতে লাগানো ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এতে নদ-নদী অববাহিকায় অবস্থিত নীচু চরের জমিতে লাগানো বাদামের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও মরিচ, তিল ও বোরোধানের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

জেলার রাজারহাট উপজেলার তিস্তা নদী অববাহিকায় অবস্থিত ডাংরারহাট এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাদাম চাষী হাবিবুর রহমান জানান, ‘গত ৩দিনের মধ্যে পানি বাড়ার ফলে বাদাম ক্ষেতগুলো তলিয়ে যায়। বন্যার পানির সাথে পলিমাটি আসায় বাদামগুলো মাটির নীচে চাপা পরে গেছে। এখণ ঠিকভাবে তোলা যাচ্ছে না। অধিকাংশ ক্ষেত বিনষ্ট হয়ে গেছে।’

একই এলাকার বাদাম চাষী মুস্তফা জানান, ‘ভাই সব শেষে। কাদামাটি পরে বাদাম তলিয়ে গেছে। একজনের জায়গায় ৫ জন লেবার নিয়েও বাদাম তোলা যাচ্ছে না। এই হলো আমাদের পরিস্থিতি। এখন কি করে বাঁচবো। বাঁচার আর পথ নেই। শেষ চিকিৎসা ছিল এই বাদাম চারটা দিয়া সংসার চালাবো সেটাও আর হলো না। এখন ঋণের দায়ে কী হবে তা আর ভেবে পাচ্ছি না।’

কৃষক আজিজুল জানান,’লাখ লাখ টাকা খরচ করে ফসল চাষ করে এখন চরম লোকসানে পরে গেছি। পাওনাদারের চাপে বাড়িতে থাকতে পারবো না। সরকারিভাবে কোন সহযোগিতা করলে উপকার হতো।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, বৃষ্টি ও বন্যার কারণে জেলায় ১৩৪ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। এরমধ্যে বাদাম ৫৪ হেক্টর, বোরোধান ৪৪ হেক্টর, সবজি ২৬ হেক্টর, তিল ৯ হেক্টর ও মরিচ ১ হেক্টর।
জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের তিস্তাপাড়ের ডাংরার চরের কৃষক সাইফুল জানান,
এ ব্যাপারে রাজারহাট উপজেলা কৃষি অফিসার শামসুন্নাহার সাথী জানান, রাজারহাটে তিস্তা নদীর অববাহিকায় অবস্থিত অপেক্ষাকৃত নীচু এলাকায় রোপনকৃত বাদাম ও মরিচের আংশিক কিছু ক্ষতি হয়েছে।

এতে নিমজ্জিত হয়েছে ৪২ হেক্টর জমি এবং আংশিক ক্ষতি হয়েছে ১৬ হেক্টর জমিতে। পানি নেমে গেলে আমরা প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি পরিমাপ করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো। তারা যে পরামর্শ প্রদান করবেন সেভাবে কাজ করবো।