• আজ ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রধান শিক্ষক বদলানোর মিশনে এমপির ভাই

| নিউজ রুম এডিটর ৭:৩৪ অপরাহ্ণ | নভেম্বর ১০, ২০২১ শিক্ষাঙ্গন

স্টাফ রিপোর্টারঃ মিরপুর সিদ্ধান্ত হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে কেবলই শুরু হয়েছে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা। সভাপতিত্ব করছেন কমিটির সভাপতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুজিব সারোয়ার মাসুম। কমিটির দাতা সদস্য মো. আজিজুল ইসলাম মাত্র কোরআন তেলাওয়াত শুরু করেছেন। ঠিক তখনই একদল সন্ত্রাসী এসে ঘিরে ফেলেন প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম রনিকে। তাকে বাধ্য করে আগে থেকে লিখে আনা পদত্যাগপত্রে সই করতে।

অভিযোগ উঠেছে, ঘটনার সময় নিজে দাঁড়িয়ে থেকে প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগে চাপ দেন ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য আগা খান মিন্টুর ভাই, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যোৎসাহী সদস্য কাইয়ুম খান ঝন্টু। প্রধান শিক্ষক পদে বসানোর জন্য বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে তিনি ও তার সহযোগীরা ১০ লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।

তবে কাইয়ুম খান ঝন্টু এসব অভিযোগ অস্বীকার করে গত সোম ও গতকাল মঙ্গলবার দুই দফা কথোপকথনের সময় বলেন, প্রধান শিক্ষক অসত্য বলেছেন। আপনারা স্কুলে আসেন, খোঁজ নিয়ে দেখেন, কোনো চুক্তি হয়েছে কিনা? আমি সেদিনের সভায় ছিলাম বটে, তবে কোনো সন্ত্রাসী যায়নি। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তিনি বলেন, সেখানে উপস্থিত সাধারণ অভিভাবকরাই সেদিন চিৎকার করে তাকে বের করে দিতে বলছিলেন।

ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য, ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম আমীর হোসেনও প্রধান শিক্ষককে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করেন। ‘দুর্নীতি করলে আইনানুগ পথে না হেঁটে সন্ত্রাসী এনে চাপ দিয়ে একজন প্রধান শিক্ষককে বের করে দিতে পারেন কি’- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী যখন ক্যু করে তখন কি সব বিষয় নিয়মমাফিক পথে হয়?’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির একজন সদস্য বলেন, যেভাবে সন্ত্রাসী কায়দায় প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, তা এক কথায় নজিরবিহীন। এটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য বড় হুমকি।

সভায় যা ঘটেছিল :অনুসন্ধানে জানা গেছে, সন্ত্রাসীরা পদত্যাগপত্রে সইয়ের জন্য চাপ দিলে প্রধান শিক্ষক তাতে প্রথমে সম্মত হননি। এতে সন্ত্রাসীরা মারমুখী হয়ে ওঠে। দু’জন তার শার্টের কলার ধরে অশ্নীল ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে যান সভার সভাপতি কাউন্সিলর মুজিব সারোয়ার মাসুম। এ প্রসঙ্গে তিনি পরে বলেন, যেভাবে একশ-দেড়শ সন্ত্রাসী নিয়ে ওরা কমিটির সভায় ঢুকেছিল, আমি অসহায় হয়ে পড়েছিলাম। কিছু বললে আমাকেই ওরা হয়তো আক্রমণ করে বসত।

ঘটনার সময় কমিটির দাতা সদস্য আজিজুল ইসলাম ও শিক্ষক প্রতিনিধি জরিনা বেগম মৃদু আপত্তি জানিয়ে সন্ত্রাসীদের বলেন, এভাবে একজন প্রধান শিক্ষককে বিদায় করা যায় না। একটা নিয়মকানুন তো আছে। সন্ত্রাসীরা তখন ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের দু’জনকেও কুৎসিত গালি দেয়। এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম রনি পদত্যাগপত্রে সই করেন। সন্ত্রাসীরা প্রধান শিক্ষকের কক্ষের চাবি তার কাছ থেকে কেড়ে নেয়। ব্যাংকের চেক বই ও রেজিস্টার খাতাও জোর করে নিয়ে নেয়। এরপর তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া হয়।

প্রধান শিক্ষক যা বলছেন :এ প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম রনি সমকালকে বলেন, আমি প্রাণের ভয়ে ভীত হয়ে পদত্যাগপত্রে সই করেছি। স্থানীয় সাংসদের ভাই ঝন্টু সাহেব ও কমিটির অভিভাবক সদস্য, আওয়ামী লীগ নেতা আমীর হোসেন পূর্বপরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে এনে পদত্যাগপত্রে সই নিয়ে আমাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিয়েছেন। তিনি জানান, প্রধান শিক্ষক পদে বসানোর জন্য বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে তারা ১০ লাখ টাকার চুক্তি করেছেন। এ কারণে তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়ার পর তার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ প্রচার করা হচ্ছে।

প্রধান শিক্ষক বলেন, বলা হচ্ছে, আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অথচ আমাকে কোনো পত্র দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, সভা থেকে আমাকে বের করে দিয়ে তারা তাদের ইচ্ছামতো রেজুলেশন লিখে নিয়েছে। কী লেখা হয়েছে তা জানি না। তিনি প্রশ্ন করেন, দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে কেন তা ম্যানেজিং কমিটির সভায় আলোচ্য বিষয় হিসেবে আনা হলো না, কেন আগাম কোনো নোটিশ দেওয়া হলো না, কেন আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হলো না।

প্রধান শিক্ষক রনি অভিযোগ করেন, সেদিন ভয়ে ভীত হয়ে তিনি বাসায় চলে যান। পরদিন তাকে প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে না দিলে তিনি দারুস সালাম থানায় যান সাধারণ ডায়েরি করতে। থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ প্রথমে জিডি নিতে চাননি। তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে তিনি যান সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মিজানুর রহমানের কাছে। তিনিও জিডি নিতে চাননি। এরপর প্রধান শিক্ষক যান ডিএমপির মিরপুর বিভাগের ডিসি আ স ম মাহতাব উদ্দিনের কাছে। তিনি সব শুনে ওসিকে নির্দেশ দেন জিডি নেওয়ার জন্য। পরে দারুস সালাম থানার ওসি গত ১ নভেম্বর জিডি (নম্বর ৩৯) নেন।

এ প্রসঙ্গে হাইস্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মুজিব সারোয়ার মাসুম বলেন, ‘আমরা প্রধান শিক্ষককে তিন মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করেছি। তাকে বলেছি, আপনি আইনগতভাবে আবার প্রতিষ্ঠানে ফিরে আসুন।’ সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রধান শিক্ষক পাননি- এ কথা জানালে তিনি বলেন, আমরা ডাকযোগে নোটিশ পাঠিয়েছি।

তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া :পুরো ঘটনা জানিয়ে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম রনি ৬ নভেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে একটি আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুরো বিষয়টি তদন্ত করতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন।

মাউশি সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশের পর প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তারা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

মিরপুর সিদ্ধান্ত হাইস্কুল দারুস সালাম থানার ১০৫/৩ গোলারটেক হেল্ডিংয়ে অবস্থিত। ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির বয়স এখন ১০৫ বছর। ১৯১৬ সালে এ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে বর্তমানে প্রায় এক হাজার ৩০০ ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-কর্মচারী মিলিয়ে আরও অর্ধশতজন কর্মরত রয়েছেন।

ঝন্টু ও আমীরের দুর্নীতির অভিযোগ : সন্ত্রাসীদের নিয়ে যাওয়ার কথা অস্বীকার করে এমপির ভাই কাইয়ুম খান ঝন্টু গত সোমবার সমকালকে বলেন, সাধারণ অভিভাবকরা সেদিন বিদ্যালয়ের গেটে ভিড় করেছিলেন। তারাই চিৎকার করে বলছিলেন প্রধান শিক্ষককে বের করে দিতে। তিনি দাবি করেন, প্রধান শিক্ষক রনি দুর্নীতিবাজ। তিনি বিদ্যালয়ের পাঁচ লাখ ৫৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। টেস্ট পরীক্ষায় ৮-১০ বিষয়ে ফেল শিক্ষার্থীদেরও তিনি বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেন ৩০-৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে। তার আমলে বিদ্যালয়ের ফল খারাপ হয়েছে। তাকে সরাতে আগের এমপি আসলামুল হক আসলামও ডিও লেটার দিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ চুরি করেছেন। তাই দু’দিন আগে তার বিরুদ্ধে চুরির মামলা হয়েছে। বিদ্যালয়ের ৪৫ জন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন।

অভিভাবক সদস্য, আওয়ামী লীগ নেতা এসএম আমীর হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক হওয়ার আগে নজরুল ইসলাম রনি ভাড়া থাকতেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর দুটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। ফ্ল্যাটের দরজা কেনার বিল বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে পরিশোধ করেছেন। বিদ্যালয়ের একটি ল্যাপটপ তিনি এক বছর ধরে বাসায় নিয়ে নিজের মেয়েকে ব্যবহার করতে দিয়েছেন। ৫০ জন শিক্ষকের কারও সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো নেই। অভিভাবকদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করতেন। কমিটির সভাপতিকে হাত করে তিনি সব অপকর্ম করে গেছেন।

দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম :দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে নজরুল ইসলাম রনি বলেন, দুর্নীতি হয়ে থাকলে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন? তিনি বলেন, পাঁচ লাখ ৫৮ হাজার টাকা আদৌ আত্মসাৎ হয়নি, স্কুলের তহবিলেই আছে। এটা ভর্তির টাকা। এ বছর জানুয়ারি মাসে ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থীরা তো গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ভর্তি হয়ে টাকা জমা দিয়েছে। তাই সে টাকা স্কুলের তহবিলে জমা হয়েছে ডিসেম্বরে। জানুয়ারি মাসের আয়ের সঙ্গে সে টাকা সমন্বয় করার কথা। সব প্রতিষ্ঠান তাই-ই করে। কিন্তু সমন্বয় না করে আমাকে ইচ্ছাকৃতভাবে চোর বানাতে জানুয়ারি মাসে এই টাকা ঘাটতি দেখিয়ে অডিট আপত্তি তোলা হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, পরিচালনা কমিটির সদস্য এসএম আমীর হোসেন নানা অনৈতিক সুবিধা চেয়ে না পেয়ে নানা অভিযোগ করছেন। আর কাইয়ুম খান ঝন্টু এর আগে বিদ্যালয়ের বেঞ্চ বানাতে এক লাখ টাকা অগ্রিম নিয়ে মাত্র ৭০ হাজার টাকার কাঠ দেন। বাকি টাকার কোনো বিল-ভাউচার দেননি তিনি। ভাউচার চাইলে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। সে সব রাগই তিনি এখন আমার ওপর প্রয়োগ করছেন।

তবে কাইয়ুম খান ঝন্টু জানান, বিদ্যালয়ের বেঞ্চ বানানোর জন্য কাঠমিস্ত্রি ডেকে এনে দিলেও তিনি এ-সংক্রান্ত অন্য কোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। বরং নজরুল ইসলামই কাঠ কিনতেন এবং বিল-ভাউচারে বেশি করে খরচ দেখাতেন।

ল্যাপটপ ব্যবহার প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম রনি বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ব্যবহারের জন্য একটি ল্যাপটপ আছে। চুরি কেন করব? আমি তো এখন পর্যন্ত এ বিদ্যালয়ের বৈধ প্রধান শিক্ষক। তাই সেটি আমার কাছেই আছে।

শিক্ষক সমিতির বিবৃতি :প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম রনি বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বাশিস) একাংশের সভাপতি। তার অবৈধ চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। অবিলম্বে তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে বাশিস। সোমবার সংগঠনের নেতারা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গত ৩০ অক্টোবর মিরপুর সিদ্ধান্ত হাইস্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভা চলাকালে একদল সন্ত্রাসী প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে এবং প্রধান শিক্ষককে অব্যাহতি দিয়ে রেজুলেশন করার কথা বলে চাকরিচ্যুতির হুমকি দেয়। এরপর আগে থেকে টাইপ করা পদত্যাগপত্রে পেশিশক্তি ব্যবহার করে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর নেয়। একই সঙ্গে অফিস কক্ষের চাবি ও ব্যাংকের চেক বই এবং রেজিস্টার কেড়ে নেয়।’

শিক্ষক নেতারা অভিযোগ করেন, এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অবৈধ উপায়ে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম চাকরি হারিয়ে বর্তমানে স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে নিয়ে চরম বিপদাপন্ন ও অর্থ সংকটে রয়েছেন। তারা এ বিষয়ে ঢাকার জেলা প্রশাসক, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, শিক্ষা সচিব ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে লিখিতভাবে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন। তারা বাশিসের পক্ষ থেকে এই প্রধান শিক্ষককে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে একাধিক কর্মসূচিও পালন করেছেন।