• আজ ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিলেটে এক নারী কনস্টেবলের একাদিক সংসার নিয়ে আলোচনার ঝড়

| নিউজ রুম এডিটর ১:৪৫ অপরাহ্ণ | মার্চ ৩, ২০২২ সারাদেশ, সিলেট

স্টাফ রিপোর্টার,সিলেট: সিলেটে এক নারী কনস্টেবলের একাদিক সংসার নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে।

রীতিমতো বিভ্রান্তের মধ্যে পড়েছেন তার সাথে সংসারকারী স্বামী ও তার পরিবার। প্রথম বিয়ে তথ্য গোপন করে পুলিশে চাকুরী নিলে অবশেষে তার প্রকাশ পায়। কিন্তুর মাত্র ৪ বছরের ব্যবধানে করেছেন একাধিক সংসারও। চাকরির এক দশক পূর্ণ হওয়ার আগেই সিলেট শহরতলির নালিয়া এলাকায় কিনেছেন ২১ লাখ টাকা মূল্যের জমি।

‘গুণধর’ ওই নারী কনস্টেবলের নাম রুমেনা আক্তার (৩১)। যিনি বছরের পর বছর ধরে সিলেট মহানগর পুলিশের সাপ্লাই-রেশন স্টোরে কর্মরত রয়েছেন।

তথ্যসুত্রে সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নতুনপাড়ার আহম্মদ আলীর কন্যা রুমেনা আক্তার ২০১১ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগদান করেন। পুলিশের বিধান অনুযায়ী কনস্টেবল পদে যোগদান করতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে। কিন্তু, রুমেনা আক্তার প্রথম বিয়ের তথ্য গোপন করেই পুলিশে যোগ দেন এবং দিব্যি চাকরিও করে যাচ্ছেন। চাকরিতে যোগদানের আগে রুমেনা আক্তারের সাথে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের আক্কাস আলীর পুত্র শামসুজ্জামানের সাথে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে হয়। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার ও কাজী মাওলানা মো. শাহেদ আলী এক লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়েটি রেজিস্ট্রেশন করেন। বিয়েতে কনে পক্ষ থেকে ইব্রাহিমপুর গ্রামের মো. আবু বকর মিয়ার পুত্র মো. আব্দুছ ছালামকে উকিল (সাক্ষী) নিযুক্ত করা হয়। কাবিননামায় কনের পিতা বিশ্বম্ভরপুরের নতুনপাড়ার মৃত ছমির উদ্দিনের পুত্র আহাম্মদ আলী ও কনের চাচা মো. আব্দুছ ছামাদ কনের পক্ষে সাক্ষী হন। বরের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম ও দিরাই উপজেলার আনোয়ারপুর নয়াহাটির আব্দুল মতলিবের পুত্র মো. আব্দুল মতিন বরের পক্ষে কাবিন নামায় সাক্ষী হন। কাবিননামায় বর শামসুজ্জামান ও কনে রুমেনা আক্তারও স্বাক্ষর করেন। কাবিননামায় এসব তথ্য রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে নগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বিএম আশরাফুল্লাহ তাহের জানান, বিধিবহির্ভূত ভাবে তথ্য গোপন করে কেউ চাকরিতে প্রবেশ করলে কর্তৃপক্ষ অবশ্যই বিষয়টি দেখবেন। দুর্নীতিতে কেউ জড়িয়ে পড়লে কোনো ছাড় নেই। তদন্তে বিষয় গুলো প্রমাণিত হলে পুলিশের আইন অনুযায়ী অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ দিকে পুলিশের নিয়োগ বিধি লঙ্ঘন করে কনস্টেবল পদে যোগদানের পর রুমেনা আক্তার প্রশিক্ষণে অংশ নেন। প্রশিক্ষণকালে স্বামী শামসুজ্জামান স্ত্রী রুমেনা আক্তারের ব্যয় নির্বাহের জন্য মানি অর্ডার করে নিয়মিত টাকাও পাঠাতেন। পুলিশে যোগদানের পর রুমেনা থাকতেন সিলেট জেলা পুলিশ লাইন্সে আর শামসুজ্জামান নিজ বাড়ি ইব্রাহিমপুরেই বসবাস করতেন। একসময় শামসুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দেন রুমেনা। স্ত্রীর বদলে যাওয়ায় শামসুজ্জামান সিলেটে ছুঁটে আসেন।
এসে শুনতে পান রুমেনা তার এক সহকর্মীর সাথে নতুন করে সম্পর্ক তৈরি করেছেন। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা করেন শামসুজ্জামান। এজন্য সিলেটে বিভিন্ন জায়গায় ধর্ণাও দেন।

রুমেনার সাথে এক সময় শামসুজ্জামানের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। পরে সুনামগঞ্জ সদরের মুক্তারপাড়ার আরেক নারীকে বিয়ে করেন শামসুজ্জামান। গত ১০ মাস আগে তিনি সৌদি আরব চলে যান।

এ সকল বিষয় নিয়ে শামসুজ্জামানের সাথে কথা বলতে এ প্রতিবেদক চেষ্টা করেন। টানা কয়েক দিনের চেষ্টার পর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তার সাথে কথা হয়। দীর্ঘ বক্তব্যে তিনি তার পেছনের বিভিন্ন ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। এসময় তিনি জানান, স্ত্রী রুমেনার বদলে যাওয়ায় সিলেটে ছুঁটে যাই। পরিচিত দু’জনকে নিয়ে তাকে আমার দিকে ফেরানোরও আপ্রাণ চেষ্টা করি। কিন্তু, তার কর্মকান্ডে হতাশ হয়ে সুনামগঞ্জে ফিরে আসি। আমাকে তালাক দেওয়ারও হুমকি দেয়। কিন্তু, বাস্তবে কখনো তালাকের কোনো কাগজ আমি পাইনি। সুনামগঞ্জ শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরির সুবাদে রুমেনার সাথে পরিচয় হয়। তার চাকরির জন্যে আমার চেষ্টা কম ছিল না।

এজন্যে আমার প্রায় ৭০/৭৫ হাজার টাকা খরচও হয়েছে। তার পুলিশের চাকরিতে যোগদানের আগে আমাদের আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর সে কনস্টেবল পদে যোগদান করে। তার চাকরির জন্য আমাকে অনেক তদবির করতে হয়েছে। এখন আর অতীত মনে করে শুধু শুধু কষ্ট