• আজ ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভৈরবে ডা. নিয়ামুল ইসলামের বিনামূল্যে চিকিৎসা ক্যাম্পেইনে তিনশজনকে চিকিৎসা

| নিউজ রুম এডিটর ৬:৫৪ অপরাহ্ণ | মার্চ ১৮, ২০২২ সারাদেশ

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, মোঃ মাইন উদ্দিনঃ
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে প্রায় তিন শতাধিক মানুষকে বিনা বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছেন কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (সার্জারী) ডা. মোঃ নিয়ামুল ইসলাম।

শুক্রবার (১৮ মার্চ) সকাল ৯টায় ভৈরব উপজেলার মানিকদী পুরান গাঁও ৫৮নং সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয় মাঠে কুলিয়ারচরের স্বনামধন্য ‘হেলথ্ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ কর্তৃক আয়োজিত ক্যাম্পেইনে এই তিন শতাধিক রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার বাবু মুকুল চৌধুরী, মোঃ খালেদ আম্মেদ শরীফ। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন কুলিয়ারচর ‘হেলথ্ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার’-এর মার্কেটিং অফিসার রাজু বনিক, সঞ্জিত বিশ্বাস, তানিয়া আক্তার ও মাহমুদা আক্তার প্রমুখ।

হেলথ্ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্তাপনা পরিচালক লিটন রায় বলেন, ডা. মোঃ নিয়ামুল ইসলাম স্যারের নির্দেশনায় এর আগেও আমাদের হেলথ্ কেয়ারের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা ক্যাম্পেইন করেছি। নিয়ামুল স্যার হাজার হাজার রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছেন। ক্যাম্পেইন থেকে গরিব দুঃখীসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষ সেবা পাচ্ছেন।

ডা. নিয়ামুল ইসলম কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সহকারী অধ্যাপক (সার্জারী) হিসেবে কর্মরত আছেন। এর আগে তিনি কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সার্জারী বিভাগে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। সে সুবাদে এ উপজেলার আপামর জনতার সাথে গড়ে উঠে তার নিবিড় সম্পর্ক। কুলিয়ারচর সহ এর আশপাশের মানুষ তাকে এক নামে চেনেন। তিনিও কুলিয়ারচরের মানুষের ভালোবাসার টানে ছুটে আসেন কুলিয়ারচরে। হাসপাতালের ডিউটি শেষে কুলিয়ারচর পৌর শহরে ‘হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামের একটি প্রতিষ্টানে সপ্তাহে তিনদিন রোগী দেখেন।

কুলিয়ারচরের কয়েকজন রোগীর সাথে কথা বলে মনে হয়েছে, ‘হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ মানেই যেন ডা. নিয়ামুল ইসলাম। উপজেলার অনেকের মুখে ডাক্তার মানেই যেন ডা. নিয়ামুল ইসলাম। তিনি দুনিয়া কাঁপানো বৈশ্বিক মহামারী (কোভিড-১৯) করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে জীবন-মরণ ঝুঁকি নিয়েই হেলথ কেয়ারের চেম্বারে বসে কুলিয়ারচর উপজেলার অগনণিত মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন এবং দিয়ে যাচ্ছেন। বেশ ক’জন রোগী বলেন, নিয়ামুল স্যার ভিজিট নিয়ে কখনোও রোগীকে জুলুম করেন না। সদাহাস্যজ্বল এই মানবসেবক গরীব রোগীদের ক্ষেত্রে বলতে শুনা যায়- ‘যান, ভিজিট লাগবেনা, আমার জন্য দোয়া করবেন।

অসহায়দেরকে ভিজিট বিহীন ফ্রী চিকিৎসার পাশাপাশি হতদরিদ্র রোগীদেরকে বিনামূল্যে ঔষধ (কোম্পানী কর্তৃক প্রদত্ত স্যাম্পল) প্রদান করতেও শোনা যায়। পরীক্ষা নিরীক্ষার ক্ষেত্রে রোগীদেরকে বলেন, এ পরীক্ষাটা করাতে পারলে ভাল হতো, না পারলে থাক পরে দেখা যাবে। এছাড়া আলেম উলামা, স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী সহ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও দ্বীনদার মানুষদের প্রতি তিনি অত্যন্ত সহানুভুতিশীল।

ডা. নিয়ামুল ইসলাম ১৯৭৬ সালের ১ জানুয়ারি রাজবাড়ী সদর উপজেলার বড়লক্ষীপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম মোঃ আবদুর রহমান। তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ের অবসপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে ডাক্তার নিয়ামুল ইসলাম সবার ছোট। তার শৈশব কৈশোর রাজবাড়ী সদর উপজেলার বড়লক্ষীপুর গ্রামেই কেটেছে। তিনি রাজবাড়ী থেকে প্রাথমিক, এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ২০০১ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা বিষয়ে স্নাতক (এম.বি.বি.এস) ডিগ্রী অর্জন করেন। পরে ২৪তম বি.সি.এস এর মাধ্যমে ২০০৫ সালে তার সরকারি চাকুরির হয়। এরপর থেকে আর থেমে থাকেনি এই মানবসেবক, চিকিৎসা বিষয়ে একের পর এক ডিগ্রী অর্জন করতেই থাকেন তিনি।

তার অর্জিত ডিগ্রীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, এম.আর.সি.এস (লন্ডন), এম.আর.সি.এস (এডিন), ডি.এম.ইউ (ডি.ইউ), পি.এস.সি (শ্রীলংকা), সি.সি.ডি (বারডেম) ও বি.সি.এস (হেলথ)।