• আজ ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুবলীগের সম্মেলন ঘিরে ‘রাজনৈতিক’ উৎসব চট্টগ্রামে

যুবলীগের চট্টগ্রাম দক্ষিণ, উত্তর ও মহানগরের সম্মেলন ঘিরে ‘রাজনৈতিক’ উৎসবের আমেজ দেখা দিয়েছে নেতা-কর্মীদের মাঝে। এই উৎসব বা সম্মেলনকে ঘিরে পৃথক সম্মেলন স্থলের আশ-পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছাঁটানো হয়েছে নানান ধরণের পোষ্টার, ফেস্টুন। আর মাত্র দুইদিন পরেই পৃথক তিনটা ভেনুতে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিকের পর ঝিমিয়ে পড়া এই সংগঠন সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা লেগেছে যুবনেতাদের। এতে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতারা। তবে ইতোমধ্যে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদে আসতে পদ-প্রত্যাশীরা সিভিও জমা দিয়েছেন বলে কেন্দ্রীয় নেতারা জানান।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিসহ নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরেই চট্টগ্রাম যুবলীগের তিন সাংগঠনিক কমিটির তৎপরতা এবং কর্মকাণ্ড ঝিমিয়ে পড়েছিল। কেন্দ্রীয় কমিটিতে নতুন নেতৃত্ব আসার পর আবারও চাঙ্গাভাব উঠে চট্টগ্রামের যুবলীগে। তারই ধারাবাহিকতায় এবং কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় নানা তৎপরতার পরই সম্মেলনের দিন-তারিখ নির্ধারণ হয়েছে।
এরই মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদে প্রত্যাশীরা সিভিও জমা দেন কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে। এতে নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগ কমিটির নেতাদের তদবির, লবিং শুরু করেছেন সেই পদ-প্রত্যাশীরা। আরও জানা গেছে, আগামী ২৮ মে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সম্মেলন পটিয়াতে, উত্তর জেলা যুবলীগের সম্মেলন হবে ২৯ মে হবে হাটহাজারীতে এবং ৩০ মে হবে নগর যুবলীগের সম্মেলন হবে নগরের দি কিং অব চিটাগাং কমিউনিটি সেন্টারে।

এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ নাঈমের নেতৃত্বে সম্মেলনের প্রস্তুতি দেখতে একাধিকবার চট্টগ্রামে এসেছেন। বর্তমানে চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-সম্পাদক শেখ ফজলে নাঈম ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা চট্টগ্রামে অবস্থান করে ভেনুসহ নানা সাংগঠনিক কাজ করছেন।

এতেই কেন্দ্রীয় নেতাদের ঘিরে পদ-প্রত্যাশীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। নগরীর হোটেল র‌্যাডিশন, সাকের্ট হাউজ, আলমাস সিনেমা, লালখান বাজারসহ নগরীর বিভিন্ন স্থান এবং জেলার পৃথক দুটি সম্মেলনস্থলসহ আরও বিভিন্ন জায়গায় পোষ্টার, ব্যানার-ফেস্টুনে ছড়িয়ে গেছে নেতাদের।

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সম্মেলন মানেই একটা মিলনমেলা। এই মিলনমেলায় নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিসহ চলবে উৎসাহ-উদ্দীপনাও। চট্টগ্রামের তিন সাংগঠনিক কমিটির সম্মেলন করতে ইতিমধ্যে নানা প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।

তিনি বলেন, নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে যুবলীগের পতাকাতলে কোন ধরণের বিপথগামী স্থান পাবে না। এখানে অনুপ্রবেশকারীদের কোন ধরণের স্থান নেই। যুবলীগের ত্যাগী নেতাদের পাশাপাশি যারা ছাত্রলীগ করা, তাদের কাজের মূল্যায়ন করা হবে বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ-প্রত্যাশী ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তৈয়ব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দীর্ঘ ১৯ বছর পর উত্তর জেলা যুবলীগের সম্মেলন হচ্ছে। এই সম্মেলনকে ঘিরে উত্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করছেন।

এই উদ্দীপনা ধরে রাখতে যোগ্য এবং অতীতের ত্যাগ, নির্যাতন এবং দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা আছে এমন নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন সেটাই প্রত্যাশা করছি। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির রক্তধারা শেখ ফজলে শামস পরশ এমন নেতৃত্বই চট্টগ্রামে উপহার দিবেন।

চট্টগ্রামের একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, যুবলীগের এই সম্মেলন ঘিরে এক প্রকার রাজনৈতিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতি এবং চট্টগ্রামের নেতা-কর্মীদের উৎসাহ, যুবলীগের পদ প্রত্যাশীদের পোষ্টার ব্যানার সোভা পাচ্ছে অলি-গলিতেও। তবে দীর্ঘদিন ধরেই এই সম্মেলন নেতা-কর্মীদের উৎসাহ দিচ্ছেন বলে জানান তারা।

চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও নগর কমিটিঃ চট্টগ্রাম যুবলীগের তিন (উত্তর, দক্ষিণ ও নগর) ইউনিটে ১৯১টি বায়োডাটা কেন্দ্রীয় কমিটিতে জমা দেন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের। পৃথক এই তিন কমিটিতে ১৯১ সিভির মধ্যে চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় সভাপতি পদে ৯ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২২ জন, নগরীতে সভাপতি পদে ৩৫টি আর সাধারণ সম্পাদক পদে ৭৩ জন এবং দক্ষিণ জেলায় সভাপতি পদে ১৩ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৯ জনের সিভি জমা দেন। এরপর আবারও তিন সাংগঠনিক কমিটির জন্য অন্য পদের প্রত্যাশীদের সিভি জমা নিয়েছেন।