• আজ ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 সংসদের আসন বাড়িয়ে ৬০০ করার সুপারিশ | মানবিক বাংলাদেশ গড়ার হাতিয়ার শিক্ষার্থীরা; সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা আমিনুল হক | বাংলাদেশকে তাবেদারী রাষ্ট্র হিসাবে মনে করতো ভারত –রুহুল কবির রিজভী | রেলপথ ব্লকেড কর্মসূচি শিথিল, ১১টায় বৈঠক | সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে মামলার ভয়ে যুবককের আত্নহত্যা! | যে যাই বলুক, জুনের পরে নির্বাচন যাবে না: আসিফ নজরুল | মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ মারা গেছেন | ফ্যাসিস্টরা নববর্ষকে দলীয় হাতিয়ারে পরিণত করেছিল: নাহিদ | দেশ থেকে অশুভ দূর হয়েছে, যতটুকু আছে তাও চলে যাবে: প্রেস সচিব | ড: ইউনূস পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবেন কীভাবে, প্রশ্ন মান্নার |

বাচ্চাই বেগম যেন আরেক ‘আসমানী’

| নিউজ রুম এডিটর ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ | ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪ লালমনিরহাট, সারাদেশ
আজিজুল ইসলাম বারী,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ ‘আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমন্দীর ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও।’ পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের ওই আসমানীর মতো বাচ্চাই বেগমকে দেখতে হলে যেতে হবে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের বারাজান  গ্রামে।
বাচ্চাই বেগমের ঘর বলতে নদীর ধারে বাঁশের বেড়া আর ওপরে টিন দিয়ে ছাওয়া একটি ঝুপড়ি। আসবাব বলতে বাঁশের চৌকি, রান্নার দু-একটা বাসনকোসন। নেই শীত নিবারণের গরম কাপড় বা লেপ। এই ঝুপড়িতেই দিনযাপন বাচ্চাই।
বাচ্চাই বেগম (৬২) ওই গ্রামের কমর উদ্দিনের স্ত্রী। চরম দরিদ্রতার কষাঘাতে জরাজীর্ণ ঘরে অসুস্থ স্বামী-সন্তানদের নিয়ে গরুর সাথে বসবাস করছেন ভূমিহীন এই দম্পতি। নিজের থাকার ঘরের একদিকে বিছানা অন্যদিকে খড় বিছানো গরুর থাকার জায়গা। তাদের কাজ জুটলে মুখে খাবার ওঠে, না হলে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটে। এভাবেই শীত – গ্রীষ্ম -বর্ষা পার করছেন তারা। তবুও দেখার যেন কেউ নেই।
কান্না জড়িত কন্ঠে বাচ্চাই বেগম বলেন, অভাবের তারনায় গরু নিয়ে একই ঘরে থাকতে হয়। খাওয়া দাওয়াও করতে হয় একই ঘরে। আমার স্বামী অসুস্থ কাজ করতে পারে না, আমি অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে যা আনি তাই খাই, না আনলে না খাই। অনেকে সরকারি ঘর পাইলেও আমাদের ভাগ্যে জুটেনি সরকারি বরাদ্দের ঘর।
ভূমিহীন স্বামী কমর উদ্দিন বলেন, খাস জমিতে কোন রকম দো-চালা একনা টিনের ঘর করে স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে থাকি। পাশে গরুটা থাকে। ওই ঘরেই থাকা খাওয়া সব। কিন্তু দুর্গন্ধে থাকা যায় না। এই অবস্থায় বাড়িঘরে কোন আত্মীয়স্বজন আসতে পারেনা। সহায় সম্বল কিছুই নেই। শুধু একটা গরু আছে। সরকার একটা ঘর দিলে বাকী জীবনটা সুখে থাকতে পারতাম।
প্রতিবেশি জাকির হোসেন বলেন, অন্যের জমিতে নদীর ধারে এমন মানবেতর জীবনযাপন করছেন বাচ্চাই ও কমর উদ্দিনসহ তার পুরো পরিবার। বৃষ্টি আসলে কষ্ট তাদের আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়। রান্না ঘরের যে অবস্থা তাতে চুলা ভিজে যায়। রান্না করতে পারে না।
চলবলা ইউনিয়নের (৮ নং ওয়ার্ডের) ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ বলেন, এই দম্পতি ভূমিহীন তাদের চার মেয়ে এক ছেলে আছে। সবাই থাকেন অন্যের জমিতে। সরকারি বিধি মোতাবেক তারা সরকারি ঘর পাওয়ার যোগ্য।
কালীগঞ্জ নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর ওই পরিবারের খোঁজখবর নিচ্ছি। আমরা তাঁকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করব।’