• আজ ৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 ছেলের ফোন বেজেই চলেছে!  এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের কেবিন ক্রু দীপকের মা | প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক চলছে | চিকিৎসক দম্পতি ও তিন শিশু সন্তান বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার আগমুহূর্তে তোলা সেলফি | আওয়ামী লীগের ভুল ছিল, আজকের অবস্থা ভুলেরই শাস্তি: আব্দুল হামিদ | বিধ্বস্ত বিমানে বেঁচে আছেন একজন, জানালেন কী ঘটেছিল! | লন্ডনে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সম্পত্তি জব্দ, যা বললেন সাংবাদিক জুলকারনাইন | প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাতের অনুরোধে সাড়া দিলেন না ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী | নারায়ণগঞ্জে মধ্যরাতে যৌথবাহিনীর অভিযান, অস্ত্রসহ আটক ২ | করোনা ফের বাড়ছে, ঢাকায় নতুন করে শনাক্ত ১০ জন | সাতক্ষীরায় ২টি তক্ষক সাপসহ আটক-১ |

যানজটমুক্ত ঢাকা: সমন্বিত উদ্যোগেই মিলবে স্বস্তির শহর

| নিউজ রুম এডিটর ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ | জুন ১৩, ২০২৫ ফিচার

 

মো: সাইফুল্লাহ খাঁন, ( সাংবাদিক ও কলামিস্ট) :ঢাকা, দেশের হৃদয় বলে পরিচিত হলেও প্রতিদিনের জীবনে যেন শ্বাসরোধকারী এক সংকটের নাম—যানজট। শহরের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি পর্যন্ত প্রায় সর্বত্রই যানজটের করালগ্রাস। এতে যেমন নষ্ট হয় মূল্যবান সময়, তেমনি মারাত্মক প্রভাব পড়ে অর্থনীতি ও পরিবেশের উপর। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যানজট নিরসনে প্রয়োজন নাগরিক ও সরকারি পর্যায়ের সমন্বিত এবং টেকসই পদক্ষেপ।

যানজটের কারণ: কোথায় ঘাটতি?

🔸 অপরিকল্পিত নগরায়ন ও রাস্তার সংকীর্ণতা

ঢাকার অধিকাংশ এলাকা গড়ে উঠেছে পরিকল্পনা ছাড়াই। বাসাবাড়ি বেড়েছে, কিন্তু সড়কের প্রস্থ অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। ফলে রাস্তায় চাপ বাড়ছেই।

🔸 ব্যক্তিগত গাড়ির আধিক্য

বছরে বছরে বাড়ছে প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল ও রাইড শেয়ারিং গাড়ির সংখ্যা। একজন যাত্রীর জন্য একটি গাড়ি ব্যবহার করায় যানজট বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

🔸 অকার্যকর গণপরিবহন ব্যবস্থা

নিরাপদ ও সময়নিষ্ঠ গণপরিবহনের অভাবে অনেকেই ব্যক্তিগত গাড়ি বেছে নিতে বাধ্য হন।

🔸 অবৈধ পার্কিং ও দখলদারিত্ব

রাস্তার উপর অবৈধ পার্কিং, হকার ও অস্থায়ী দোকান সড়ক সংকুচিত করে দেয়। এতে যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে।

🔸 দুর্বল ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা

অনেক সিগন্যাল কাজ করে না, ট্রাফিক পুলিশও পর্যাপ্ত নয়। আইন ভঙ্গ করেও অনেক সময় পার পাওয়া যায়, যা অনিয়মকে উৎসাহিত করে।

 

সরকারের করণীয়

গণপরিবহন আধুনিকীকরণ:
দ্রুত বিআরটি, মেট্রোরেল ও আধুনিক বাস সার্ভিসের সম্প্রসারণ। রুট র‌্যাশনালাইজেশন বাস্তবায়ন করা।

ইনফ্রাস্ট্রাকচার উন্নয়ন:
নতুন ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস ও প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বহুতল পার্কিং স্থাপন।

ডিজিটাল ট্রাফিক সিস্টেম:
স্মার্ট ট্রাফিক সিগন্যাল, সিসিটিভি নজরদারি ও স্বয়ংক্রিয় জরিমানা ব্যবস্থার বাস্তবায়ন।

আইনের প্রয়োগ:
ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা, নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা।

 

সাধারণ নাগরিকদের করণীয়

অপ্রয়োজনে প্রাইভেট গাড়ি না চালানো, গণপরিবহন ব্যবহারে অভ্যস্ত হওয়া

অফিস বা স্কুলে যেতে কার পুলিং ও রাইড শেয়ারিং ব্যবহার করা

স্বল্প দূরত্বে হাঁটা বা সাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তোলা

ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলা ও অন্যদের উৎসাহিত করা

 

গাড়ি মালিক ও চালকদের দায়িত্ব

ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলা

সঠিক স্থানে পার্কিং

ট্রেনিংপ্রাপ্ত চালক নিয়োগ

সিগন্যাল অমান্য না করা ও অনিয়ন্ত্রিত বাস চালানো থেকে বিরত থাকা

ঢাকার যানজট কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের একক সমস্যা নয়। এটি একটি সামগ্রিক নগর সমস্যা, যার সমাধান সম্ভব সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমে। পরিকল্পিত উন্নয়ন, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং নাগরিক সচেতনতা—এই তিনটি স্তম্ভের উপর দাঁড়ালে ভবিষ্যতের ঢাকা হতে পারে গতিশীল, পরিবেশবান্ধব এবং নাগরিকবান্ধব এক আধুনিক শহর।