অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়াই ইছালে সাওয়াব দু’দিনের ওয়াজ ও মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। তবে ওরসের নাম দিলেও চলছে মেলা। আর এ মেলাকে কেন্দ্র করে জমজমাট বাণিজ্য, জুয়া ও অশ্লীলতার কারণে গত বছরই এটি বন্ধ করে দিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। এ মেলায় চারদিনের জন্য মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন স্টল বিক্রি করছেন মনির মোল্লা ও তার সহকারীরা।
প্রশাসনের অনুমোদন না নিয়ে এবারো মেলার আয়োজন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সুশীল সমাজ। তবে অনুমোদন না নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
জানা গেছে, উপজেলা দক্ষিণ চরবংশি ইউনিয়নের কালু ব্যাপারীর হাট ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝামাঝি ফসলি জমির মাঠে এ মেলা আয়োজন করা হয়। এরই মধ্যে শতাধিক মঞ্চ ও প্যান্ডেল বানানো হয়েছে। মেলা উদযাপন কমিটিতে রয়েছেন মনির হোসেন মোল্লা, নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মিন্ট ফরায়েজী, ইউপি সদস্য আবুল হোসেন ও দিদার মোল্লা, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রসিদ মোল্লা, ওসমান গণি ব্যাপারী ও আমিনুল হক ব্যাপারী। তবে এবারো এ মেলা বন্ধের দাবিতে লক্ষ্মীপুরের ডিসি ও এসপি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইসমাইল ব্যাপারী।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, প্রতি বছর দুদিন ব্যাপী হজরত ক্বারি আলী হাজের আল কাদরী শাজলীর ইছালে সাওয়াব ওরস মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এ ওরসের নামে মেলা আয়োজন করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। মেলাকে কেন্দ্র করে মদ, জুয়ার আসর, অসামাজিক কার্যক্রম, ছেলে-মেয়ের অবাধ মেলামেশা হরহামেশায় হয়। এসবের কারণে ১০ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এ মেলা। ওরস না হলেও মেলা প্রতি বছরই বসে।
মেলায় লটারির নামে জুয়া খেলার কারণে এলাকায় চুরি-ডাকাতি বাড়ে। মাদক নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে দক্ষিণ চরবংশি এলাকায়। এছাড়া মাদক ব্যবসায়ীরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। মেলায় মধ্যরাত পর্যন্ত উচ্চশব্দে গান-বাজনা হওয়ায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার বিপর্যয় ঘটে। এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন হাজারো অভিভাবক।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আবুল হোসেন বলেন, এ মেলা আয়োজনে আমার কোনো মতামত বা অনুমতি নেই। যেহেতু ওরস মাহফিলকে কেন্দ্র করে মেলা বসছে। সেহেতু ওরস ও মেলার জন্য প্রশাসনের কোনো অনুমতি নেই। তবে ছোট একটি স্টল থেকে ছয় হাজার আর বড় স্টল থেকে ৯ হাজার টাকা ভাড়া নেয় মেলার আয়োজক কমিটি।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার ড. এইচএম কামরুজ্জামান জানান-‘এ ব্যাপারে রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। পুলিশ পাঠিয়ে তিনি এ মেলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।’