• আজ ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানি, বিবৃতি দিয়ে যা বললেন ২৪ বিশিষ্টজন

| নিউজ রুম এডিটর ৮:০৪ অপরাহ্ণ | নভেম্বর ১১, ২০২২ শিক্ষাঙ্গন

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষায় বাংলা প্রথমপত্রের প্রশ্নে (সৃজনশীল প্রশ্নের একটি অংশ) সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে প্রশ্ন প্রণয়ন করার ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২৪ বিশিষ্ট ব্যক্তি।

পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ‘নৈরাজ্য বন্ধ’ করার আহ্বান জানিয়ে শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, সম্প্রতি মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও কারিগরি স্তরের পাবলিক পরীক্ষার সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক, নারীর প্রতি অবমাননাকর এবং একজন লেখকের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত ও অবমাননাকর প্রশ্ন সংযোজনের ঘটনা ঘটেছে। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত, কোনো অবস্থাতেই এসব মেনে নেওয়া যায় না।

বিবৃতিদাতারা হলেন- পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সুলতানা কামাল, সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, রাশেদা কে চৌধূরী, রামেন্দু মজুমদার, ডা. সারওয়ার আলী, নুর মোহাম্মদ তালুকদার, রানা দাশগুপ্ত, খুশী কবির, এমএম আকাশ, এসএমএ সবুর, রোবায়েত ফেরদৌস, সালেহ আহমেদ, পারভেজ হাসেম, আবদুল ওয়াহেদ, এমএ সামাদ, সেলু বাসিত, রনজিৎ কুমার সাহা, একে আজাদ, অলক দাসগুপ্ত, আবদুর রাজ্জাক, আবদুল আলীম, দীপায়ন খীসা ও গৌতম শীল।

বিবৃতিতে বিশিষ্টজনরা বলেন, ‘৩০ লাখ জীবনের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পরও একটি সর্বজনীন, অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। হেফাজতের ১৩টি দাবি মেনে নিয়ে এই শিক্ষাকে আরও পশ্চাৎপদ ও প্রতিক্রিয়াশীল করা হয়েছে। দেশের শিশুদের একটি বিরাট অংশ শিক্ষা গ্রহণ করছে সরকার নিয়ন্ত্রিত আলিয়া মাদ্রাসা ও সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা কওমি মাদ্রাসায়। অনেক বিতর্কের মধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে সৃজনশীল পদ্ধতি প্রবর্তনের পরও শিক্ষকেরা নিজেদের এ পদ্ধতির উপযোগী গড়ে তুলতে পেরেছেন কিনা- তা নিয়ে এখনো প্রশ্ন আছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সৃজনশীল শিক্ষাপদ্ধতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাইকে সৃজনশীল হয়ে উঠতে হবে। সম্প্রতি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, নারীর প্রতি অবমাননাকর, ব্যক্তির প্রতি বিদ্বেষমূলক প্রশ্নপত্র শিক্ষাব্যবস্থার প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক ও আধুনিকতাবিরোধী প্রবণতার চিত্র উঠে এসেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুধু প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও মডারেশন বোর্ডের সদস্যদের যোগ্যতা ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করার পাশাপাশি সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে ভাবার সময়ও এসেছে।’

‘পাশাপাশি মৌলবাদী একটি গোষ্ঠী বিজ্ঞান শিক্ষার পঠন-পাঠন থেকে চার্লস ডারউইনের যুগান্তকারী বিবর্তনবাদ তত্ত্ব বাদ দেওয়ার যে দাবি তুলেছেন, তা-ও আমাদের বিচলিত করছে। এসব বিষয়ে বাংলাদেশে বিজ্ঞানশিক্ষা ও মুক্তচিন্তার প্রসার বাধাগ্রস্ত করবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে রাষ্ট্র ও সমাজকে অন্ধকার, সাম্প্রদায়িকতা আর কূপমণ্ডূকতায় ঠেলে দেবে।’