• আজ ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রীনগরে বৃষ্টিতে আলুর জমিতে জলাবদ্ধতা

| নিউজ রুম এডিটর ৮:১৭ অপরাহ্ণ | ডিসেম্বর ৭, ২০২১ মুন্সীগঞ্জ, সারাদেশ

মো:ফারুক খাঁন,শ্রীনগর(মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: শ্রীনগরে গত ২ দিনের টানা বৃষ্টির কারণে কৃষকের রোপনকৃত প্রায় ৬’শত হেক্টর আলুর জমি প্লাবিত হয়েছে। এতে শতশত কৃষক আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে সূত্রমতে জানা গেছে। আলু চাষে গেল বছরের লোকসানের পরিমান কিছুটা কাটিয়ে উঠতে এবারও মাথায় চিন্তা নিয়ে আলু চাষ শুরু করেন তারা। এছাড়াও টানা বৃষ্টিতে বুরো ধান চাষীদের তৈরীকৃত বীজতলাগুলো পানিতে ডুবে গেছে। এঅবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা দিশেহারা হয়ে উঠেছেন।

সোমবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বীররতারা, আটপাড়া, তন্তর ও কুকুটিয়া এলাকার আংশিক জমিতে আলুবীজ রোপন করা হয়েছিল। এছাড়া বাকী জমিগুলোতে কৃষক হালচাষ, সার প্রয়োগ ও বীজআলু রোপনের অপেক্ষায় করা হচ্ছিল। গত ২ দিনের টানা বৃষ্টিতে এখানকার জমিগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে করে জমিতে রোপনকৃত বীজআলু পঁচে যাওয়ার পাশাপাশি কৃষকের ব্যাপক লোকসানের আশঙ্কা করা হচ্ছে। লক্ষ্য করা যায়, পানি নিস্কাশনের অভাবে এসব জমিতে বৃষ্টির পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ হিসেবে জানা যায়, বিভিন্ন খাল, কালভার্ট-সেতু ও পানি প্রবাহের স্থান যততত্রভাবে ভরাটের কারণে এখানকার কোন কোন চকে/বিলের জমিতে জমে থাকো বর্ষার পানিই নিস্কাশন হতে পারছেন। এর মধ্যে অতিরিক্ত বৃষ্টির পানিতে আবাদি জমিগুলো চাষাবাদে অনুপযোগী হয়ে পরেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রীনগর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে বীরতারা, তন্তর, আটপাড়া ও কুকুটিয়া ইউনিয়নে বেশী আলু চাষ করা হয়। ২ হাজার ২’শত হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কৃষক এচাষের প্রস্তুতি নেন। তবে টানা বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে আলু চাষীদের স্বপ্ন ভাঙ্গছে। প্রতি কানি জমিতে (১৪০ শতাংশ) আলু চাষে কৃষকের খরচ পড়ে প্রায় ২ লাখ টাকা। নিজস্ব জমি থাকলে খরচের পরিমান কিছুটা কম হয়। ১ কানি জমিতে আলু চাষের জমির মালিককে দিতে ৬০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। এছাড়া বীজআলু, জমির হালচাষ, সার, কীননাশক স্প্রে, পরিচর্যা, শ্রমিক মজুরীসহ অন্যান্য সব খরচ শেষে জমিতেই প্রতি মণ আলুর দাম পরবে প্রায় ৭০০ টাকা।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, আলু জমিতে এখন হাঁটু পানি। এতে জমিতে বপনকৃত আলুবীজ পঁচে যাবে। পুনরায় হালচাষ, সার, আলুবীজ ও অন্যান্য খরচ দিয়ে আলু চাষ করাটা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠবে না। অনেকেই বলেন, আলুর বাজার পাওয়ায় গেল বারের আলু খেতিতে ব্যাপক লোকসানের সম্মূখীন হন। এ বছর আলু চাষে পুজী খাটিয়ে শুরুতেই লোকসানের মুখ দেখছেন। নানা প্রতিকূলতার কারণে আলু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা দিনদিন ঋৃণগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। এই পরিস্থিতিতে হতাশ কৃষকরা কি করবেন ভেবে কোন প্রতিকার খুঁজে পাচ্ছেন না। এমনটাই জানান এখানকার আলু চাষীরা।

শ্রীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার শান্তনা রানী এ ব্যাপারে জানান, উপজেলায় প্রায় ৬’শত হেক্টর জমিতে আলুর বীজ বপন করা হয়েছিল। জমিতে আলুর চারা এখনও গজায়নি। টানা বৃষ্টির পানি জমিতে জমার কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বৃষ্টির কারণে আলু চাষীরা বিলম্বনায় পরেছেন। ক্ষতি পরিমাণের বিষয়ে উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অফিস মাঠে কাজ করছেন। তিনি আরো বলেন, উপজেলায় ২ হাজার ২’শত হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কন্ডাল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আলু চাষে ৬টি প্রদর্শনী বাস্তবায়ন হবে। উপজেলায় সারের কোন সংকট নেই।