• আজ ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম

সিরাজদিখানে শিব মন্দির ঘুরে গেলেন রাজা বল্লভ সেনের অষ্টম বংশধর তরুন সেন!

| নিউজ রুম এডিটর ৭:৪৬ অপরাহ্ণ | জুলাই ৪, ২০২২ মুন্সীগঞ্জ, সারাদেশ

মোহাম্মদ রোমান হাওলাদার: প্রাচীন বাংলার প্রভাবশালী মহারাজা বল্লাল সেনের শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী ফেগুনাসার শিব মন্দির ঘুরে গেলেন, রাজা বল্লভ সেনের সপ্তম বংশধর তরুন সেন। শিকরের টানে সুদুর কোলকাতা থেকে ছেলে রজত সেনকে সাথে নিয়ে ছুটে আসেন মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের ফেগুনাসার গ্রামে অবস্থিত শিব মন্দিরে। গত শনিবার বেলা ১১ টার দিকে এখানে এসে তিনি মন্দিরটি ঘুরে দেখার সময় অনেকটা আবেগ আপ্লুত হয়ে পরেন।

বৃহত্তর ঢাকা, ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চল নিয়ে গঠিত স্বাধীন বাংলার নবাব আলীবর্দী খাঁনের রাজনগর পরগনার রাজা ছিলেন রাজা রাজ বল্লভ সেন। রাজা রাজ বল্লভ সেনের প্রয়ানের পর তার ষষ্ঠ তম বংশধর অবনিকান্ত সেন এ শিব মন্দিরে আসা যাওয়া করতেন। এর আগে অবনিকান্ত সেনের পিতা রাজা রাজ বল্লভ সেনের পঞ্চম বংশধর শ্যামাকান্ত কান্ত সেনেরও এ মন্দিরে পুজাপাঠের জন্য আসা যাওয়া ছিলো। তরুন সেনের পূর্ব পুরুষ রাজা রাজ বল্লভ সেনের বংশধরের প্রায় সকলেই এই শিব মন্দিরে যাতায়াত ছিলো। এক সময় প্রাচীন বাংলার প্রভাবশালী মহারাজা বল্লাল সেন বিশাল এলাকা নিয়ে এ শিব মন্দিরটি নির্মান করলেও মন্দিরের বর্তমান স্বল্প জায়গা দেখে অনেকটা হতাশা প্রকাশ করেন তরুন সেন। তরুণ সেনের পিতা প্রয়াত অবনি কান্ত সেন বাংলাদেশে পুঁজোর জন্য টাকা পাঠাতেন এবং নিজেও বাংলাদেশে আসতেন এমনটা তিনি আগে থেকে জানতেন, তবে কোনদিন কোলকাতা থেকে এ শিব মন্দির দেখার জন্য আসা হয়নি।

সম্প্রতি তিনি বিক্রমপুরের ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন নিয়ে লেখা বই ও ইউটিউবে নানা ভিডিওসহ বিভিন্ন সংবাদ দেখে রাজা রাজ বল্লভ সেনের এই শিব মন্দিরে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেন। রাজা বল্লভ সেনের প্রয়ানের পর পুত্র রাধা মোহন সেন, রাধা মোহন সেনের পুত্র নীল মনি সেন, নীল মনি সেনের পুত্র গদা চরন সেন, গদা চরন সেনের পুত্র শ্যামা কান্ত সেন,শ্যামা কান্ত সেনের পুত্র অবনি কান্ত সেন,অবনি কান্ত সেনের পুত্র তরুন সেন বংশপরম্পরায় পর্যায়ক্রমে সেন বংশের সপ্তম বংশধর হন। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সনাতনধর্মের আদিপিতা শিবের উপাসক ছিলেন রাজা রাজ বল্লভ। তার রাজকার্য পরিচালনা করতে রাজনগর থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে এই ফেগুনাসার শিব মন্দিরে সন্ধ্যা পূজা করতেন। এর আগে প্রাচীন বাংলার প্রভাবশালী মহারাজা বল্লাল সেন সাল অনুমান (১১৫৯-১১৮৫) সালের মধ্যে যে কোন সময় মন্দিরটি নির্মাণ করেন। মহারাজা বল্লাল সেনের শাসনামলের পর কালের বিবর্তনে মন্দিরটির স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হলে অনুমান (১৭২৫-১৭৫৮) সালে রাজা রাজ বল্লভ সেন এই মন্দিরটি পুনঃরায় সংস্কার করেন।

রাজা রাজ বল্লভ সেনের সপ্তম বংশধর তরুন সেন বলেন, আমি রাজা বল্লভ সেনের অষ্টম বংশধ তরুন সেন। কোলকাতা থেকে বাংলাদেশে শুক্রবার এসেছি।এরপর এখানে এসলাম। আমার পুর্ব পুরুষেরা আমার বাবা, দাদারা বাংলাদেশে আসতেন। এখান থেকে বাবাকে চিঠি লেখা হতো। তিনি পুজো জন্য টাকা পাঠাতেন। তারা বাংলাদেশে আসতেন জানতাম কিন্তু কোথায় আসতেন আমার জানা ছিলো না। অনেক কস্টে ইউটিউব ও গুগোল ম্যাপ দেখে আবিস্কার করতে পেরেছি। আমি ভেবেছিলাম এখানে মন্দিরের জায়গা অনেক বড় হবে। এসে দেখি আশপাশের বসতি ঘন ঘন লোকজনের বাড়ি ঘর। আমরা যেন ঠিকমতো পুজো করতে পারি সে জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি।